খবরিয়া২৪ নিউজ ডেস্ক ,১৯ আগস্টঃ ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় ২ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে মালদার গাজোলের বৈরগাছি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান সুবোধ সরকারকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। পাশাপাশি ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট শোভন রায় এবং নির্মাণ সহায়ক অপূর্ব বারুইকেও করেছেন দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের অবৈধভাবে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টে দায়ের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা থেকে গাজোলে গিয়েছিল দুর্নীতি দমন শাখার ১০ সদস্যের একটি দল। বৈরগাছি ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুবোধ সরকার-সহ পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের প্রায় ২ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই কয়েকজন বাসিন্দা। ওই মামলা করার পরই একজন মামলাকারীর দাদা ধনঞ্জয় সরকার খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন শাখা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করায় খানিকটা আশ্বস্ত হয়েছেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগ, বিজেপি কর্মী খুনের অন্যতম অভিযুক্ত ছিল এই সুবোধ সরকার। গত বছরের ২৭ অক্টোবর ধনঞ্জয় সরকারের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে সেই সময়কার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুবোধ সরকার সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গাজল থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। এলাকার বিজেপি কর্মী, ধনঞ্জয় সরকারের ভাই প্রহ্লাদ সরকার যিনি সেই সময় প্রধানের বিরুদ্ধে জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ করার পরেই ধনঞ্জয় খুন হন বলে অভিযোগ। তাতেও অভিযোগ ওঠে সেই সময়কার প্রধান সুবোধ সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। অবশেষে কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চ তাঁকে গ্রেফতার করল দুর্নীতির অভিযোগে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ কোটি টাকার তছরুপ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলি ১০০ দিনের কাজের টাকা বলে জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে প্রহ্লাদ সরকার বলেন, ‘সুবোধ সরকারের বিরুদ্ধে আমিই অভিযোগ করেছিলাম পুকুর কাটার টাকার গরমিল নিয়ে। তারপর থেকে সুবোধ সরকারের আমার উপর রাগ ছিল। একদিন আমাকে না পেয়ে রাতের অন্ধকারে আমার দাদাকে পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। আজ শুনলাম সে গ্রেফতার করেছে। আমি তাঁর চরম শাস্তি চাই।’
মৃত ধনঞ্জয়ের ছেলে পরিতোষ সরকার বলেন, ‘ওই ব্যক্তি শুধু আর্থিক তছরুপই করেনি, আমার বাবাকেও হত্যা করেছে। সেটার বিচার আজ পর্যন্ত পাইনি। পুলিশ সেই সময় কোনও সাহায্য করেনি আমাদের। এখন চুরির অভিযোগে দুর্নীতি দমন শাখা তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এবার অন্তত প্রশাসন আমাদের বিচার দিক। আমার বাবার হত্যার তদন্ত পুনরায় শুরু হোক।