খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১২ জুনঃ ১২ই জুন ২০২৫ বৃহস্পতিবার এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। গুজরাটের আহমেদাবাদে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান টেক-অফের কিছুক্ষণ পরেই মেঘানিনগরের কাছে ভেঙে পড়ে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কিছু ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে শিউরে উঠছে গোটা বিশ্ব। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বিমানে মোট ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য ছিলেন, যার মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু। বিমানটি যাত্রীদের নিয়ে লন্ডন যাচ্ছিল। কিন্তু গুজরাটের আহমেদাবাদে বিজে মেডিকেল কলেজের উপর বিমান ভেঙে পড়ায় আহত পড়ুয়ারাও। আমেদাবাদের এই দুর্ঘটনার আগেও ভারত সম্মুখীন হয়েছে এমন তিনটি মারাত্মক বিমান দুঘর্টনার। যা কাঁপিয়ে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে।
১) এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ৮১২:
২০১০ সালের ২২ মে। দুবাই থেকে আসা বোয়িং ৭৩৭ বিমানটির ম্যাঙ্গালোরে অবতরণ আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা। কিন্তু সেই অবতরণেই আগে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ভেঙে পড়ে গোটা বিমানটি। দুর্ঘটনা ঘটবে বুঝতে পেরে ফার্স্ট অফিসার ‘গো-অ্যারাউন্ড’অল দিয়েছিলেন। এই কলে ল্যান্ডিং অ্যাবর্ট করে (অর্থাৎ অবতরণ না করে) এয়ারপোর্টের চারপাশে একপাক খেতে হয়। তারপর ফের অবতরণের প্রস্তুতি নেওয়ার নিয়ম। ফার্স্ট অফিসারের কথায় কান দেননি ক্যাপ্টেন। অস্থিরভাবেই অবতরণের চেষ্টা করেন। বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে বেরিয়ে যায়। পাহাড়ের ঢালে বেয়ে গড়িয়ে পড়ে যায় এবং বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে যায়। বিমানে থাকা ১৬৬ জন যাত্রী এবং কর্মীদের মধ্যে ১৫৮ জন নিহত হন। মাত্র আটজন প্রাণে বাঁচেন। এটি ছিল এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের প্রথম মারাত্মক দুর্ঘটনা।
২) এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ৮৫৫ঃ
১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি। বোম্বে থেকে দুবাই যাচ্ছিল এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ৮৫৫। বোয়িং ৭৪৭ বিমানটি টেক অফ করার দুই মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে ভেঙে পড়ে সমুদ্রে। বান্দ্রা উপকূল থেকে প্রায় ৩ কিমি দূরে আরব সাগরে ভেঙে পড়ে গোটা বিমান। বিমানে থাকা ২১৩ জন যাত্রী এবং ক্রু নিহত হন। দুর্ঘটনার তদন্তে দেখা যায়, যে, বিমানের একটি যন্ত্রের ব্যর্থতার কারণে ক্যাপ্টেনের কিছুক্ষণের জন্য দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। যার ফলে তিনি বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
৩) সৌদিয়া ফ্লাইট ৭৬৩ঃ
১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর। ভারতের দিল্লি থেকে সৌদি আরবের ধাহরান যাচ্ছিল বোয়িং ৭৪৭ এয়ারক্র্যাফটের সৌদিয়া ফ্লাইট ৭৬৩। অন্যদিকে কাজাখস্তানের চিমকেন্ট থেকে দিল্লি ফিরছিল কাজাখস্তান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১৯০৭। দিল্লির প্রায় ১০০ কিলোমিটার পশ্চিমে হরিয়ানার চরখি দাদরি শহরের উপর দুই ফ্লাইটের সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় উভয় বিমানের ৩৪৯জন যাত্রী নিহত হয়। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক মিড-এয়ার (মধ্য-আকাশ) সংঘর্ষ বলে মনে করা হয়। এ যাবৎ ভারতে ঘটা সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা ছিল এটি। তদন্তের পর জানা যায়, কাজাখের বিমান সঠিক উচ্চতা বজায় রাখতে পারেনি। তাদের ব্যর্থতার কারণেই এই সংঘর্ষ ঘটে। ইংরেজি ভাষার দুর্বলতার কারণে কাজাখ ককপিট বিমান এটিসি (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল) এর নির্দেশ বুঝতে পারেনি।