মোথাবাড়ি পরিদর্শনে এলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় সহ তিন সদস্যের একটি দল

48

মালদা, ৪ এপ্রিল : আমরা শান্তি চাই রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে আর্জি মহিলাদের। পুলিশ আছে তাই একটু ভরসা পাচ্ছি। কিন্তু আজ নয় কাল তো পুলিশ চলে যাবে, তখন কি হবে? এই আতঙ্কই এখন তাড়া করছে মোথাবাড়ির গ্রামগুলিতে। পুলিশের ভুমিকা নিয়ে কোন ক্ষোভ নেই, কোন পক্ষের। তবে একটাই আতঙ্ক পুলিশ পাহারা উঠে গেলে নতুন করে কিছু হবে না তো। সেই দিনের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে শিউরিয়ে উঠলেন সবজি বিক্রেতা শঙ্করী মন্ডল। তাঁর কথায় ৪৩ বছর ধরে মোথাবাড়ি স্ট্যান্ডে সবজি বিক্রি করছি। কোনদিন এমন ঘটনা দেখিনি।

কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে হাত জোড় করে তিনি আনুরোধ জানান আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে। ঘটনার ছয়দিন পর রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় সহ তিন সদস্যের একটি দল মোথাবাড়ি পরিদর্শনে আসেন। মোথাবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত চারটি গ্রাম পরিদর্শন করে কথা বলেন উভয় পক্ষের মহিলাদের সঙ্গে। পুলিশের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন করেন মহিলাদের। তবে প্রতিটি গ্রামের উভয় পক্ষের মহিলারা পুলিশের ভুমিকা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ঘটনার পর পরিবারের পুরুষদেরকে পুলিশ মারধর করার পর অনেকেই তুলে নিয়ে গেছে। অনেককেই অকারণে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন মহিলারা।

বাসন্তী রায় বলেন, এর আগে কোনদিন এমন ঘটনা এলাকায় ঘটেনি। আমরা শান্তি চাই। আপাতত পুলিশ আছে তাই কিছুটা হলেও আতঙ্ক কেটেছে। পুলিশ উঠে গেলে আবার কি হবে এ নিয়েই আতঙ্কে রয়েছে আমরা। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠেছিল মোথাবাড়ি থানার বিভিন্ন এলাকা। একাধিক গ্রামে ভাঙচুর ইট পাটকেল ছড়ার অভিযোগ ওঠে দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বেশ কয়েকদিন কেটে যায় পুলিশের। এখনো মোথাবাড়ি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও মোতায়েন রয়েছে গ্রামে গ্রামে পুলিশ। নিয়মিত টহলদারি চলছে পুলিশের। এদিন মোথাবাড়ি পরিদর্শনে আছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের এক প্রতিনিধি দল।

এদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘোরার পর মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন নীলা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, গ্রামগুলি ঘুরে যা দেখলাম বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে গুজব উস্কানিমূলক কার্যকলাপেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এখনো গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। সমস্ত গ্রামগুলি ঘুরে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কোথাও কোন মহিলা সে তেমন আক্রান্ত হননি। তবে এই ধরনের ঘটনা মোথাবাড়িতে এর আগে ঘটেনি।

তিনি বলেন এলাকা যেন দ্রুত শান্ত করা যায়, আবার যেন সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, সেই পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে যেন সুস্থ সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেই দিকটা নজর রাখার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে। পুলিশ যেন নিয়মিত মনিটারিং করে এই সমস্ত বিষয়গুলো। এছাড়াও তিনি সেদিন মোথাবাড়ির চারটি গ্রাম ঘরে রিপোর্ট তৈরি করবেন। এবং সেই রিপোর্ট রাজ্য মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে বলে জানেন চেয়ারপার্সন নীলা গঙ্গোপাধ্যায়।