খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২২ সেপ্টেম্বরঃ বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজভবন ও বিকাশ ভবনের মধ্যে সংঘাত তুঙ্গে উঠেছিল। জট কাটাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় দেশের শীর্ষ আদালতকে। উপাচার্য নিয়োগে সার্চ গঠন করবে সুপ্রিম কোর্ট। তার জন্য রাজ্যপাল,রাজ্য ও ইউজিসি-র কাছে প্রস্তাবিত নামের তালিকা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে এবার রাজভবন ও রাজ্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব কিছুটা হলেই থিতিয়েছে। সমন্বয় রেখেই কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যপালকে। এবার সেই গুঁতো খেয়ে তাঁদের নাম সর্বোচ্চ আদালতে পেশ করবেন বলে জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কারা থাকবেন সার্চ কমিটিতে? ইতিমধ্যেই তাঁদের চিহ্নিত করেছেন বলে জানান রাজ্যপাল। তবে তাঁর মনোনীত ব্যক্তিরা বাংলার নাকি বাইরের, সে নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট জানান, আর একতরফাভাবে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা যাবে না। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। আর সেটা সার্চ কমিটি গঠন করে এবং আলোচনার মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। ওই কমিটিতে থাকার জন্য রাজ্য, রাজ্যপাল এবং ইউজিসিকে কমপক্ষে ৩–৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করার কথা বলা হয়েছে। এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কিন্তু রাজ্যপাল চুপ করে ছিলেন। ১০ দিনের মধ্যে সব পক্ষকে ৩ থেকে ৫ জন বিশিষ্ট ব্য়ক্তির নাম পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতির দীপঙ্কর দত্তর বেঞ্চ। আর তাতেই চাপে পড়ে এবার সার্চ কমিটি তৈরি করে পাঠানো হচ্ছে।
অন্যদিকে রাজ্যের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিনিধির নাম ঘোষণা করা হয়নি। তবে আজ রাজভবনে দাঁড়িয়ে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে রাজ্যপাল বলেন,‘মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সার্চ কমিটি গড়ার জন্য সদস্যদের নামের তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই তালিকা পাঠানো হবে। রাজভবন রাজনীতির জায়গা নয়। সংঘাত মুক্ত হওয়ার জায়গা হওয়া উচিত।’
আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ভিনরাজ্যের অফিসারদের দিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ এবারেও উঠছে। সেই তালিকায় কারা থাকছেন সেটা নিয়ে নীরব থেকেছেন তিনি। তবে এবার নরমপন্থা নিচ্ছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মন্তব্যে রেগে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছিলেন, রাতেই অ্যাকশন দেখতে পাবেন। তারপর নবান্ন আর নয়াদিল্লিতে মাঝরাতে পাঠান দুটি কনফিডেন্সিয়াল চিঠি। এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
শুক্রবার সাংবাদিকদের সামনে উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দুটি চিঠির উত্তর পাওয়া নিয়ে পরিস্থিতি ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তা দুই সাংবিধানিক সহকর্মীর মধ্যে থাকাই বাঞ্ছনীয়। তবে ওই চিঠি দুটো আর মিস্ট্রি নয়,হিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে।’ চিঠি নিয়ে মুখ খুললেও বিষয়টি ভাঙেননি রাজ্যপাল। রাজ্যপাল বলেন, ‘ওই মিস্ট্রি এখন হিস্ট্রি।’ অর্থাৎ চিঠির রহস্য এখন ইতিহাস।