খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১৯ অগাস্ট, কলকাতাঃ ছেলে নির্দোষ, তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করল যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত নাসিম আখতারের পরিবার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুতে শুক্রবার যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা নাসিম।
রসায়ন বিভাগের প্রাক্তনী নাসিমের গ্রেপ্তারের পরই ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাঁর মা। পরিবারের দাবি, নাসিম নির্দোষ। গত ৯ অগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের। ঘটনার দিন যাদবপুরেই ছিলেন নাসিম।
এই ঘটনায় গতকাল ধৃত তিনজনের মধ্যে ২ জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। তাঁদেরই একজন মেমারির নাসিম আখতার। মেমারি ২ নং ব্লকের বারারি গ্রামের নাসিম বর্ধমানের সপ্তপল্লি শিক্ষা নিকেতনে পড়াশোনা করেছেন। তারপর কলকাতায় এসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন। ১০ অগাস্ট দাদুর মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি, এমনটাই জানিয়েছে তাঁর পরিবার। ১০ অগাস্ট ভোরে মৃত্যু হয় ‘নির্যাতিত’ ছাত্রের।
জানা গিয়েছে, এমএসসি পাস করলেও পরবর্তী পড়াশোনার জন্য হস্টেলেই থাকছিলেন নাসিম। তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা নূরজাহান। তিনি স্বাস্থ্যকর্মী। নাসিমের বোন সায়েরি বলেন, “বৃহস্পতিবার হোস্টেলের সুপার দাদাকে ফোন করেছিলেন। যাদবপুরে যেতে বলেছিলেন। শুক্রবার সকালে বাবা ও দাদা যাদবপুরে যান। ওখানে দাদাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপরেই গ্রেপ্তার করে।”
নাসিমের গ্রেপ্তারির খবরে স্তম্ভিত বারারি গ্রাম। নাসিম এই ঘটনায় জড়িত— এটা বিশ্বাসই করতে পারছেন না গ্রামের বাসিন্দারা। চাষবাস করেন নাসিমের বাবা মহসিন আখতার। তাঁর একটি মুদির দোকান ছিল। ছেলের পড়াশোনার জন্য অর্থের জোগান দিতে দোকান বন্ধক রেখেছিলেন তিনি। গ্রামের হাইস্কুলে মাধ্যমিক পাশ করার পর খড়্গপুর আল-আমিন মিশনে ভর্তি হয়েছিলেন নাসিম। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন।
বড়পলাশন ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বসিরউদ্দিন ইসলাম শেখ বলেন, ‘‘নাসিম ছেলে হিসেবে খুবই ভাল। কী করে ওর নাম জড়াল, বুঝতে পারছি না।’’ নাসিমের মামা ইজাজুল হক সাহানার দাবি ফাঁসানো হয়েছে তাঁর ভাগ্নেকে। তিনি বলেন, “আমার ভাগ্না ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নন। তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।”