খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২৪ জুন, কোচবিহার: গত লোকসভা এবং বিধানসভায় ভরাডুবির পর উত্তরবঙ্গের হারানো জমি ফিরে পেতে শাসকদল যে বিশেষভাবে মরিয়া, সেটা মুখে স্বীকার না করলেও তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকেই স্পষ্ট। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী উত্তরবঙ্গে সেরকম ভাবে প্রচার না চালালেও, রাজ্যের শাসকদল কিন্তু থেমে নেই। একের পর এক রাজনৈতিক কর্মসূচির সূচনা হচ্ছে উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্র করেই। গত ২৫শে এপ্রিল তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু করেছিলেন কোচবিহার থেকেই, ঠিক একই রকম ভাবে গত বৃহস্পতিবার থেকে অরূপ, বাবুল, দেবাংশু-র মতো তৃণমূলের হেভিওয়েটরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার শুরু করলেন কোচবিহার থেকেই। কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি, দিনহাটা, সিতাই, শীতলকুচি ইত্যাদি প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারে দেখা গেল বাবুল সুপ্রিয়, অরূপ চক্রবর্তী, দেবাংশু ভট্টাচার্যদের।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামীকালই কোচবিহারের উদ্দেশ্য রওনা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পর পর কয়েক জায়গায় সভা ও নির্বাচনী প্রচার করার কথা রয়েছে তাঁর। আপাতত আগামী সোমবার কোচবিহার দক্ষিণের চান্দামারী এলাকায় প্রাণনাথ হাইস্কুল মাঠে তাঁর প্রথম জনসভা হওয়ার কথা।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল সুপ্রিমোর কোচবিহার থেকে দলের প্রচার শুরু করাকে কেন্দ্র করে কোচবিহার তথা সমগ্র উত্তরবঙ্গে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, তবে কি রাজনৈতিক সমীকরণে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে কোচবিহার? তা না হলে কেন বার বার যে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য প্রথমেই বেছে নেওয়া হচ্ছে কোচবিহারকে? অনেকেরই ধারণা, কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল এর পিছনে বড় কারণ। তাছাড়া, রাজবংশী জনজাতির মানুষের ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে একটা বড় ফ্যাক্টর। আর এই মুহূর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজবংশী জনসমাজের নেতা অনন্ত রায়ের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব অনেকটাই। দিনহাটায় কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের নেতৃত্বে বিজেপির ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধিও অন্যতম কারণ হতে পারে বলে অনেকেরই মত।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বের মধ্যে মূখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কোচবিহারের সভা ঘিরে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের প্রচারে দলনেত্রীর কোচবিহার সফর দলীয় কর্মীদের যে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এখন আগামী সোমবার চান্দামারী থেকে মূখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।