আবার ও বড় সাফল্য কোচবিহার পুলিশের অন্তর্গত শীতলকুচি থানার পুলিশের

82

খবরিয়া ২৪ নিউজডেস্ক, শীতলকুচি, ৯জুন : বৃহস্পতিবার ফের সাফল্য শীতলকুচি থানার পুলিশের । পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষনার দিনে সিবিআইয়ের হাতে ফেরার কুখ্যাত অপরাধী করিম মিঞাকে গ্রেফতার করলো শীতলকুচি থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে গত বিধানসভা ভোটে শীতলকুচির পাঠানটুলি গ্রামে আনন্দ বর্মন নামে এক বিজেপি সমর্থক খুনের অভিযোগ রয়েছে।পঞ্চায়েত ভোটের আগের করিম গ্রেফতার হওয়ায় স্বস্তি শীতলকুচি থানার পুলিশের।

গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারান শীতলকুচি ব্লকের পাঠানটুলি গ্রামের আনন্দ বর্মন নামে এক বিজেপি সমর্থক । এই খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত করিম মিঞাকে গ্রেফতার করলো শীতলকুচি থানার পুলিশ । শীতলকুচি ব্লকের পাঠানটুলি গ্রামে তাঁর বাড়ি। আনন্দ বর্মন খুনের ঘটনার পর থেকেই ঘা ঢাকা দিয়েছিলেন অভিযুক্ত । খুনের ঘটনা ছাড়াও একাধিক মামলা রয়েছে করিমের বিরুদ্ধে। সীমান্তে গরু পাচারে যুক্ত করিম।
গোপন সুত্রে পুলিশের কাছে খবর আসে পাঠানটুলি গ্রামে পরিবারের সাথে দেখা করতে এসেছে করিম । এদিন পুলিশ নজর রাখে করিমের উপর। দুপুরে শীতলকুচি থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পাঠানটুলি গ্রামে গিয়ে হায়দার আলী নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ঘেরাও করে। পুলিশের আছ্ পেয়ে ওই বাড়ি থেকে পাটখেতে ঢুকে যায়। পুলিশ তাঁকে ধাওয়া করে । করিমের হাতে থাকা সেভেন এমএম পিস্তল দিয়ে গুলি চালাতে উদ্যোগ হলে পুলিশ ধরে ফেলে করিমকে। পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলি সহ গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয় শীতলকুচি থানায় ।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটদান পর্ব ও ভোট-পরবর্তী হিংসাত্মক ঘটনা তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে যায় । গোটা রাজ্যের সাথে শীতলকুচি ব্লকের পাঠানটুলি গ্রামের যুবক আনন্দ বর্মনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত শুরু করে সিবিআই । তদন্তে নেমে দেড় বছর ধরে কোচবিহারের গোপালপুর বিএসএফ ক্যাম্পে ঘাঁটি গেরে বসে সিবিআই অফিসাররা । ঘাঁটি গেড়ে থাকলেও আনন্দ বর্মন খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি তাঁরা । অভিযুক্তদের সন্ধানে ৫০হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষনা করেও কোনো লাভ হয়নি । তবে এই খুনের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে যাবার আগে রাজ্য পুলিশ দুজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। এই খুনের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার আগেই দুই অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যায় মাথাভাঙ্গা আদালতে । সিবিআই নানা জায়গায় অভিযান চালিয়েও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে নয় জন অভিযুক্তর নামে মাথাভাঙ্গা আদালতে চার্জশিট জমা করেন সিবিআই । তাঁরা হলেন হাকিম মিয়াঁ, করিম মিয়াঁ, মিঠুন মিয়াঁ, বুলু মিয়াঁ, আবু বক্কর মিঞা, তপন কুমার বর্মন, দীনেশ্বর বর্মন, নিত্যানন্দ বর্মন ও সুভাষ বর্মন । গত কয়েক মাস আগে দীনেশ্বর বর্মন ও সুভাষ বর্মনকে গ্রেফতার করে শীতলকুচি থানার পুলিশ। এদিন করিম মিঞাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার ধৃতকে মাথাভাঙ্গা মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
তদন্তকারী সিবিআই অফিসারদের কথায়- অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।বৃহস্পতিবার আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে শীতলকুচি থানার পুলিশ ।

এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের শীতলকুচি ব্লক সভাপতি তপন কুমার গুহ জানান – বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। সিবিআই চার্জশিট জমা করেছে ।আইন আইনের পথে চলবে।
তবে শীতলকুচির বিজেপি বিধায়ক বরেন চন্দ্র বর্মনের কথায় – সিবিআই সঠিক ভাবে তদন্ত করেই চার্জশিট দিয়েছে। মূল অভিযুক্তরা এখনও গ্রেফতার হয়নি। তবে সব অপরাধী গ্রেফতার হবে।

শীতলকুচি থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী জানায় – আনন্দ বর্মন খুনের ঘটনায় আদালতের নির্দেশে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । মাথাভাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা জানান অভিযুক্ত করিম মিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আজ তাকে মাথাভাঙ্গা মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালতে তোলা হলে আদালত দশ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।