‘আপনি তো দেখছি অনেক রোগা হয়ে গিয়েছেন’, অনুব্রতকে বললেন বিচারক

76

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১০ অগাস্ট, আসানসোলঃ বৃহস্পতিবার তিহাড় থেকে ভার্চুয়াল শুনানিতে অনুব্রত’র সঙ্গে কথা বলেন আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। এদিন অনুব্রতর সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি গরহাজির ছিলেন। সায়গল কেন নেই, সেই প্রশ্ন করেন বিচারক। তখনই অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ওঁর হাত ভেঙে গিয়েছে। বাথরুমে পড়ে। হাসপাতালে এমআরআই করাতে গিয়েছে।”

বিচারক তখন অনুব্রত মণ্ডলকে দেখে বলেন, “আপনিও তো দেখছি অনেক রোগা হয়ে গিয়েছেন।” অনুব্রত বলেন, “হ্যাঁ সাহেব শরীরের রোগগুলো তো সবই রয়েছে। ওষুধপত্র সবই চলছে।” বিচারক জানতে চান, “ইনহেলার নিচ্ছেন?” অনুব্রত বলেন, “ইনহেলার , লিমুনাইজার দুটোই নিচ্ছি।” গত দু’বার অনুব্রতর ভার্চুয়াল শুনানি না হলেও এবার তিহাড় জেল থেকে তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বললেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।

অনুব্রত মণ্ডল বিচারককে বলেন, “শুনছি কেসটা দিল্লি চলে যাবে। আমরা দিল্লি যাব কেন? আমরা বাংলার মানুষ, আমাদের বাড়ি বাংলায়, আমরা দিল্লি যাব কেন? সাক্ষী-সহ সবার বাড়ি বীরভূমে।” বিচারক বলেন, “দিল্লি কোর্ট বলেছে, চার মাস আপনাকে ওখান থেকে রিমুভ করা যাবে না, তাই এখন ওখানেই থাকতে হবে।” বিচারক বলেন, “ইডি একটা আবেদন করেছে। আর কেস ট্রান্সফারের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। ১৯ তারিখ শুনানি রয়েছে।”

বিচারক আরও বলেন, “আপনার উকিলকে বলবেন প্রেয়ার করতে, আমি দেখব কিন্তু দেশের আইন যদি বাধ্য করে কেস ট্রান্সফারের বিষয়টি, তাহলে সেই আইন আমাকে মানতে হবে। আইন সবার জন্য সমান। আপনার ক্ষেত্রেও, আমার ক্ষেত্রেও।” তখন অনুব্রত বিচারকের কাছে জানতে চান, “আমি কি হাইকোর্ট, সুপ্রীম কোর্ট যেতে পারি?” বিচারকের উত্তর, “অবশ্যই, সেজন্য তো হাইকোর্ট , সুপ্রিম কোর্ট খোলা হয়েছে। আপনারা সেখানেও আবেদন জানাতে পারেন।” অনুব্রত বলেন, “সাহেব , আমার সব অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ আছে। একটা অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিন। লেবার পেমেন্ট হচ্ছে না। বেতন বোনাস কিছুই দিতে পারছি না।”

বিচারক বলেন, “আপনার মুখের কথায় এটা সম্ভব নয়। আইনজীবী মারফৎ আবেদন করুন। আমার কাছে এখনও পর্যন্ত এই মর্মে একটা আবেদনও আসেনি। আপনার মেসেজটা আমি আপনার উকিলকে বলে দিলাম, আপনার আইনজীবী প্রেয়ার করুক আমি দেখব।” তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এদিন একটি বারের জন্যও জামিনের আবেদনও করেননি অনুব্রত মণ্ডল। কথোপকথন শেষে বিচারক জানান এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১২ সেপ্টেম্বর।

গত ৩০ জুন ও ১৪ জুলাই অনুব্রত ও সায়গলের ভার্চুয়াল শুনানির কথা থাকলেও তিহার জেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগই করা যায়নি। পরপর দুদিন তাদেরকে হাজির না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন আসানসোলের বিচারক। তিনি জরুরি ভিত্তিতে তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে ই-মেইল করে নির্দেশ দিয়েছিলেন ১০ অগস্ট অনুব্রত ও সায়গলকে হাজির করানোর। সেই মত এদিন তিহার জেল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থা করেন।