খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ৯ অগাস্ট, কলকাতাঃ সোমবার মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তে নয়া শিক্ষা নীতি প্রবর্তনের কথা হয়েছে। সেই অনুযায়ী রাজ্যের সরকারি বেসরকারি সব স্কুলে বাংলা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। এই সিদ্ধান্তকে নিয়ে অনেকেই বাংলা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে রটনা ছড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার ঝাড়গ্রামের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানালেন রাজ্য সরকার স্কুলস্তরে থ্রি ল্যাঙ্গুয়েজ বা তিন ভাষা ফর্মুলা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। যেখানে প্রথম ভাষা হতে পারে মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা। বাকি দু’টোর ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা নিজের ইচ্ছেমতো ভাষা বাছাই করে নিতে পারবে। কারও উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না, সাফ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “কেউ কেউ ভাষা নিয়ে উলটোপালটা বলছে। আমরা সেটা বলিনি। এটা নয় যে কারও উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্যাবিনেটে আমরা তিন ভাষা বা থ্রি ল্যাঙ্গুয়েজ ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা করেছি।” কী এই তিন ভাষানীতি? মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বাংলায় বেশিরভাগ বাংলা মিডিয়াম স্কুল। বাকি দুটো নিজের ইচ্ছেমতো নিতে পারে। ধরুন কেউ বাংলা মিডিয়ামে পড়ে। তার তো প্রথম ভাষা বাংলা। বাকি দুটো ভাষা যা ইচ্ছে নিতে পারে। কোনও অসুবিধা নেই। এগুলো অপশনাল। যদি কেউ অলচিকি মিডিয়ামে পড়ে, তাহলে অলচিকি তাদের প্রথম ভাষা। বাকি দুটো যা ইচ্ছে নিতে পারে। দার্জিলিংয়ে নেপালি ভাষায় পড়বে। বাকি দুটো যা ইচ্ছে নিতে পারবে।”
তাঁর সাফ কথা, “থ্রি ল্যাঙ্গুয়েজ ফর্মুলায় প্রথম ভাষা নিজের মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাষা যা ইচ্ছে হতে পারে। এটা নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করবেন না।” আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় জনজাতি কোন ভাষায় কথা বলে তাই দিয়েই প্রথম ভাষার নির্ধারণ হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমার লোকাল ভাষা সবসময়ে এক নম্বরে থাকবে। তাতেই সুবিধা। বাংলায় বেশিরভাগই তো বাংলা মাধ্যম স্কুল। যাঁরা বাংলায় পড়েন, তাঁরা বাংলাই নেবেন। আরও দুটো বিষয় তাদের পছন্দমতো তারা নিতে পারে, কেউ ইংরেজি নেবে কেউ হিন্দি নেবে । কেউ নেপালি, কেউ অলচিকি নেবে । চাইলে রাজবংশী বা উর্দুও নিতে পারে । সবটাই তাদের পছন্দের বিষয়।’
প্রসঙ্গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ঝাড়গ্রাম দিয়েই ফের জেলা সফর শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকালে তিনি ঝাড়গ্রাম পৌঁছন। সেখানে পৌঁছেই প্রথমে রামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যাপীঠে যান । মুখ্যমন্ত্রীর গান গেয়েই তাঁকে স্বাগত জানান স্কুলের শিক্ষিকা এবং ছাত্রীরা। বুধবার সকালে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও কুর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানেও যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রাম সফরে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী।