শীতলকুচি, ১৯ জানুয়ারিঃ “যে বিজেপি ঘুমিয়ে আছে, তাকে ঘুমিয়ে থাকতে দিন,কারন বিজেপি দাঙ্গাবাজ, তাই শীতলকুচিতে বিজেপিকে আর কোন কর্মসূচী করতে দেওয়া যাবে না।” শীতলকুচির ডাকঘরা হাইস্কুল প্রাঙ্গনে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মীসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে একথা বলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন থেকে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলায় ৯টি আসনের মধ্যে ৯-০ করার লক্ষ্যে ১ বছর আগে থেকেই লড়াইয়ের শপথ নিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস। সেই দিন ধার্য করা হয় দিনহাটা,সিতাই,শীতলকুচি,মাথাভাঙ্গা,মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার উত্তর, কোচবিহার দক্ষিণ,নাটাবাড়ি, তুফানগঞ্জ বিধানসভায় বিধানসভা ভিত্তিক কর্মীসভা করা হবে। সেই অনুযায়ী দলের জেলা স্তরের নেতারা এক হয়ে ২০২৬ এর বিধানসভায় জেলায় বিজেপি শূন্য করার প্রস্তুতি শুরু করেন। সেই অনুযায়ী, দিনহাটা, সিতাই বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সভার পর আজ শীতলকুচিতে কর্মীসভা হয়।
এদিন সেই সভায় তৃনমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে কি করে জেলায় ৯ আসনের মধ্যে ৯টি আসনে তৃনমূলের ঝুলিতে আনা যায়। আমাদের কর্মীদের নিয়ে আমরা এক বছর আগে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মীসভা করে দলকে আরও শক্তিশালী করা এবং কর্মীদের লক্ষ্য স্থির করে দিচ্ছে আমাদের লক্ষ্য একটাই আগামী ২০২৬ এর বিধানসভায় আমাদের জয়ী হতেই হবে। তাই আমাদের মাঝে কোন জরাজীর্ণটা বা দুর্বলতা যেন আমাদেরকে যেন রোধ করতে না পারে। এভাবেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আপনি আপনার লড়াইয়ে সবাইকে পাবে না। সব পার্টিতে কিছু মানুষ আছে লড়াইয়ের সব জায়গায় তাদের আপনি পাবে না। যারা আজ এই কর্মীসভায় এসে উপস্থিত হয়েছে, আগামী দিনে লড়াইটা আপনাকেই নিতে হবে। মনে রাখবেন আজকে যারা মাঠে আসেনি তারা ২৬-এর লড়াই কাঁধে নেবে না। তাই ২৬-এর লড়াই তাদের কাঁধে দেওয়া যাবে না। তাদের উপর ভরসা করে যদি ২৬-এর লড়াই করতে যান, তাহলে শীতলকুচিতে তৃনমূলের ভরাডুবি হয়ে যাবে। তাই শীতলকুচি বিধানসভায় আমাদের যেনতেন প্রকারেণ জয়ী হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শীতলকুচিতে যে বিজেপি ঘুমিয়ে আছে,তাকে ঘুমিয়ে থাকতে দিন। বিজেপিকে আর ঘুম থেকে উঠানো যাবে না। বিজেপিকে আর শীতলকুচিতে কর্মসূচী করতে দেওয়া যাবে না। শীতলকুচিতে যদি বিজেপি ঘুম থেকে জেগে ওঠে, তাহলে ধর্মীয় কলহ, ধর্মীয় বিবাদ, বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। তাই আর এই দাঙ্গাবাজ বিজেপিকে ঘর থেকে বের করে নতুন করে সেজে উঠতে দেওয়া যাবে না বলে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন তিনি।
বিজেপি দাঙ্গাবাজ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বোস বলেন, কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি যেটা বলেছেন সেটা তার ঔদ্ধত্যের পরিচয় দিয়েছেন। কারন বিজেপি দাঙ্গাবাজ নয়, দাঙ্গাবাজ হল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেস হার্মাদদের দ্বারা পরিচালিত। তৃণমূল কংগ্রেসে যারা ভালো নেতা ছিল তারা আর এখন নেই, এখন যারা আছে তারা বিভিন্ন দল থেকে আগত নব্য তৃণমূল কংগ্রেস। ক্ষমতার লোভে তারা নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোঁড়া ছুঁড়ি করছে। এই মুহূর্তে কোচবিহার তথা গোটা বাংলা জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত এবং বোমা,বন্দুক,গুলির লড়াই অব্যাহত। দলের ক্ষমতার রাস এখন কার হাতে থাকবে সেটা নিয়ে তারা মসগুল। তাই তৃণমূল কংগ্রেস বা তৃনমূলের জেলা সভাপতি কি বলল তাতে বিজেপির কোন যায় আসে না।
২০২৬-এর বিধানসভায় কোচবিহার জেলা বিজেপিকে নয়ে-এ শূন্য করবে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিরাজ বাবু আরও বলেন, তৃণমূল আগে নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল সামলাক। তারপর আমাদের কথা ভাববে। তৃনমূলের যে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি ও তাদের অত্যাচারে মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়েছে। গত বিধানসভায় মানুষ আমাদের ভালোবেসে ৯-এর মধ্য ৬ দিয়েছে। এবার কোচবিহার জেলায় আমরা ৯-এর মধ্যে ৯ আসনে আমাদের জয় নিশ্চিত বলে জানান তিনি।
এদিনের এই কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী উদয়ন গুহ,কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া,কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরিন্দ্র নাথ বর্মন, শীতলকুচি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তপন কুমার গুহ সহ অন্যান্যরা।