সুপ্রিম কোর্টের বিচারকের কলমের খোঁচার চাকরি খুইয়ে রাতারাতি সুইসাইট নোট লিখে আ*ত্ম*ঘা*তী*র চেষ্টা ক্যানিংয়ের শিক্ষিকা

448

ক্যানিং, ৪ এপ্রিলঃ ২০১৬ সালের এসএসসি’তে নিয়োগের পুরো প্যানেল বৃহস্পতিবার বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ের পর চাকরি হারান ক্যানিংয়ের এক শিক্ষিকা। সেখানকার একটি স্কুলে ইতিহাসের শিক্ষিকা তিনি। চাকরি হারানোর খবর পেতেই তাঁর বাড়িতে পাওনাদাররা এসে হাজির হন। তাঁকে চাপ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এরপরই সুইসাইড নোট লিখে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই শিক্ষিকা। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। শুক্রবার সকাল থেকেই হইচই পড়েছে ক্যানিংয়ের নবপল্লি এলাকায়।

জানা গেছে,ওই শিক্ষিকা নাম রুম্পা সিং। তার বাড়ি মেদিনীপুর। ২০১৬ সালের প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন তিনি। সে ইতিহাসের শিক্ষিকা ছিলেন। চাকরিসূত্রে ক্যানিংয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। গতকাল সুপ্রিম রায়ের পর তার চাকরি বাতিল হয়ে যায়। এরপরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তার উপর বাড়িতে পাওনাদাররা এসে চাপ দেওয়ায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ওই শিক্ষিকা। জানা গিয়েছে, তাঁকে ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যানিং হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। তাঁর ঘর থেকে মিলেছে একটি সুইসাইড নোট। সেখানে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন ওই শিক্ষিকা।

শিক্ষিকার পরিবারের দাবি,স্বামীর চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু পরিমাণ টাকা ধার নিয়েছিলেন রুম্পা। চাকরি বাতিলের খবর প্রকাশ্যে আসতেই বাড়িতে পাওনাদাররা টাকা নিতে চলে আসে,তারপরেই এমন কাণ্ড। আপাতত, ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রুম্পা।

তাঁর স্বামী অনিমেষ জানা বলেন,‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওঁর চাকরি গিয়েছে। কিছু লোক টাকা পেত,কিন্তু খবর আসতেই ওরা বাড়িতে হানা দেয়। ওকে উল্টোপাল্টা বলে। তারপরেই সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা চেষ্টা করে।’

প্রসঙ্গত,২০১৬ সালের এসএসসি’তে নিয়োগের পুরো প্যানেল গতকাল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল রেখেছে দেশের শীর্ষ আদালত। ফলে বাতিল হয়েছে ২৫,৭৫২ জনের চাকরি। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে,তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছেন,যাঁরা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের এসএসসির মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁরা চাইলে পুরোনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন। ফের চাকরির পরীক্ষায় বসতে পারবেন চাকরি বাতিল হওয়া প্রার্থীরা। ৩ মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে।