রাজভবনের ভেতরে এসে প্রতিবাদ করুন,মুখ্যমন্ত্রীকে বার্তা রাজ্যপালের

36

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ৭ সেপ্টেম্বরঃ রাজ্য এবং রাজভবনের সংঘাত বহুদিনের। একাধিক প্রসঙ্গে এই বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছে। শিক্ষক দিবসের দিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্যের রাজ্যপালকে।সম্প্রতি উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দু’ পক্ষের মধ্যে বিবাদ প্রকট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন রাজ্যপালের নির্দেশ মেনে চললে অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করা হবে। সঙ্গেই জানিয়েছিলেন,’প্রয়োজনে রাজভবনের সামনে গিয়ে ধর্না দেব আমি।’

এবার তার প্রত্যুত্তরে রাজ্যপাল বললেন, প্রয়োজনে প্রতিবাদ দেখানো হোক রাজভবনের অন্দরেই।দিল্লি থেকে ফিরে কলকাতা বিমানবন্দরে তিনি বলেন, ‘বাইরে নয়, যা প্রতিবাদ করার রাজভবনের ভিতরে এসে করতে পারেন।’

উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে গত মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসেন অনুষ্ঠানে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে বেনজির নিশানা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছিলেন,বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রাজ্যপালের কথা শুনে চললে টাকা বন্ধ করবে রাজ্য সরকার। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপালের বার্তা, ‘বাংলায় এসেছি ভাল কিছু কাজ করার জন্য। এই দুর্নীতি আমি বরদাস্ত করব না।নেতাজির নামে শপথ করে বলছি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’

রাজ্যের পছন্দ মতো নয়, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে নিজেই অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। যা নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে। রাজ্যপাল অসাংবিধানিক কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার মমতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস।

পাল্টা তিনি বলেছেন,‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হিংসা মুক্ত দুর্নীতিমুক্ত করা অত্যন্ত প্রয়োজন।আমি উপাচার্য। আমি চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি দেশে সেরা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালন করার জন্য উপাচার্য নিয়োগ করা দরকার। রাজ্য সরকার যেভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছিল, তাকে বেআইনি বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। তাই সবাইকে ইস্তফা দিতে হয়েছে। এই অবস্থায় আচার্য হিসাবে আমাকে অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছিল। শিক্ষাদফতর বলল এটা ভুল। হাইকোর্ট বলল ঠিক।’

এদিন বাংলায় সেই যুক্তি তুলে ধরেছেন সিভি আনন্দ বোস। বলেছেন,‘আপনারা জানতে চাইবেন, কেন সরকারের মনোনীত উপাচার্য নিয়োগ করতে পারিনি। তার কারণ হল,তাঁদের মধ্যে কেউ ছিল দুর্নীতিপরায়ণ, কেউ ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছে, কেউ রাজনৈতিক খেলা খেলছিল। এখন আপনারাই বলুন বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এমন অন্তবর্তী উপাচার্য থাকা উচিত যিনি দুর্নীতি করবেন,বা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করতে পারেন।’

রাজ্যপালের অভিযোগ, যাঁদের তিনি অন্তবর্তী উপাচার্য পদে নিয়োগ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন ইস্তফা দিয়েছেন। এই বিষয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘কেন ‘তাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন জানেন? শিক্ষা দফতরের আমলারা তাঁদের হুমকি দিয়েছেন ইস্তফা দেওয়ার জন্য। বাংলায় শিক্ষা সন্ত্রাস চলছে। ওই উপাচার্যরা গোপনীয়তার সঙ্গে আমাকে এটা জানিয়েছেন।’

বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধে বদ্ধপরিকর রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, ‘শ্চিমবঙ্গবাসী আমি জানি বাংলার ভাইবোনেরা চান এই অনিয়ম বন্ধ হোক। তাঁরা আমার সঙ্গে রয়েছেন। আমি তাঁদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করে যাব।’

রাজ্যপালের এদিনের দাবি প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন,‘প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে এ রাজ্যের ভালো করাই রাজ্যপালের কাজ। কিন্তু আপনি বিজেপিকে সহায়তার জন্য কাজ করে চলেছেন। আসলে শুরুর দিকে বাংলার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছিলেন রাজ্যপাল। বাংলা শেখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, বিজেপি সেটা অপছন্দ হয়েছে। তারপরই ওনাকে ওদের হয়ে কাজ করতে বলেছে। উনিও তল্পিবাহক হয়ে সেটা করে চলেছেন।’