লোকসভায় সংশোধিত ওয়াকফ বিল বিতর্কে অনুপস্থিত জগদীশ, দেব ও শতাব্দী, তৃণমূল কি শাস্তি দেবে তাদের ? উঠছে প্রশ্ন

832

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ৪ এপ্রিলঃ দীর্ঘ বিতর্ক পর্বের পর বুধবার গভীর রাতে লোকসভায় পাশ হল সংশোধিত ওয়াকফ বিল। সেই বিলের পক্ষে ২৮৮ এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দিলেন। ব্যবধান ৫৬। মোট ভোট পড়ল ৫২০। সম্প্রতি রাজ্যের বিধানসভা বাজেট অধিবেশনে তৃণমূল কংগ্রেস হুইপ জারি করেছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিলে হাজির থাকতে হবে। কিন্তু তারপরেও বেশ কয়েকজন সাংসদ লোকসভায় সংশোধনী ওয়াকফ বিল পেশে উপস্থিত হন নি। নিয়ম অনুযায়ী তাদের শাস্তির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর।

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি একই যুক্তিতে কোচবিহার থেকে ২০২৪ সালে প্রথমবার জিতে সংসদে যাওয়া জগদীশচন্দ্র বর্মা বাসুনিয়া ও ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেব, বীরভূমের সাংসদ তথা অভিনেত্রী শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ? এই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। কারণ, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়াকফ বিলের সংশোধনী লোকসভায় পেশ করার আগে যখন তা নিয়ে আলোচনা চলছে, সেই পর্বে সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের তিন সাংসদ। লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এই তথ্য সামনে এনেছেন।

এই তিন তৃণমূল সাংসদের মধ্যে কেবলমাত্র দেবই নাকি নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন তিনি ওইদিন সংসদে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কারণ, তিনি ঝাড়খণ্ডে শুটিংয়ের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তবে, বাকি দু’জন তাঁদের অনুপস্থিতি নিয়ে দলকে কিছুই জানানি বলে দাবি সূত্রের। এ নিয়ে কথা বলার জন্য সংশ্লিষ্ট তিন সাংসদের মোবাইলের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, একমাত্র জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ছাড়া বাকি দু’জনের পক্ষ থেকে শেষ পাওয়া খবর অনুসারে কোনও সাড়া মেলেনি।

কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া জানিয়েছেন, তিনি জানতেন না ওইদিন ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং বিলটি পেশ হবে! যদি তিনি আগে থেকে এটা জানতে পারতেন, তাহলে অবশ্যই সংসদে উপস্থিত থাকতেন। পারিবারিক কারণেই তিনি ওই সময় লোকসভায় হাজির থাকতে পারেনি বলেও জানিয়েছেন এই সাংসদ।

এখানে প্রশ্ন উঠছে, ওয়াকফ সংশোধনী বিলের গুরুত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে যে কতটা, সেটা কি আদৌ অনুধাবনই করতে পারেন নি ওই তিন সাংসদ ? বিশেষ করে এঁদের মধ্যে দু’জনই যেখানে দীর্ঘদিনের জনপ্রতিনিধি। তাদের এমন আচরণে দলীয় নেতৃত্বের একাংশও ক্ষুব্ধ।

কিন্তু, বিধানসভার অনুপস্থিত বিধায়কদের মতোই এই তিন গরহাজির সাংসদের বিরুদ্ধেও তৃণমূল নেতৃত্ব পদক্ষেপ করবে কিনা, সেটা আপাতত স্পষ্ট নয়। কারণ, তৃণমূলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় স্বয়ং। তাই, এই বিষয়ে যা করা হবে, তাঁর নির্দেশেই করা হবে।