ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু রাভা যুবকের, কফিনবন্দি দেহ ফিরল বনবস্তিতে

14

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২১ জুলাই, জলপাইগুড়িঃ ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে প্রাণ হারালো বছর ২৫ এর রাভা জনজাতির যুবক পার্থ রাভা। জলপাইগুড়ি জেলার জলপাইগুড়ি বনবিভাগের মরাঘাট রেঞ্জ লাগোয়া, বনবস্তি গোসাইরহাটের ঘটনা। মূলত রাভা জনজাতির মানুষের বসবাস এই বস্তিতে।

কেবলমাত্র কৃষিকাজ ও জঙ্গলের জ্বালানি কাঠ কুড়িয়েই জীবন জীবিকা চলে এই রাভা জনজাতির মানুষের। বাড়িতে মা বাবা সহ দুই ভাইকে নিয়ে সংসার চালানো ভীষণ কঠিন হয়ে দাঁড়ানোয় নিজের পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে পার্থ পাড়ি দেয় কেরলে।

পরিবার সূত্রে খবর, ভিন রাজ্যে অভিজ্ঞতার অভাবে দৈনিক মজুরির পরিমাণ এতই কম যে – কেরলে নিজের দিন গুজরানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল পার্থর কাছে। শেষমেষ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সংসারের হাল ফেরাতে একটি বেসরকারি মাইন্ড ব্লাস্টিং কোম্পানিতে যোগ দেয় পার্থ। অত্যন্ত বিপদজনক এই কাজে আর পাঁচটি কোম্পানির থেকে মজুরি অনেকটাই বেশি। সমস্ত কিছুই যেন ঠিক চলছিল প্রত্যেক সপ্তাহে বাড়িতে সংসার চালাতে টাকাও পাঠাতো পার্থ।

কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে গত ১৯ তারিখ ঘটে যায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মাইন ব্লাস্টিং এর কাজ করার সময় পাথর ছিটকে বুকে আঘাত লাগায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় পার্থ। আর সেই খবর ছড়িয়ে যেতেই পরিবারসহ গোটা বনবস্তি এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

আজ পার্থর কফিনবন্দি দেহ প্রথমে কেরল থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত আকাশপথে ও পরে শিলিগুড়ি থেকে নিজের বাসস্থানে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসতেই গোটা বনবস্তির মানুষের চোখে শুধুই বিষাদের সুর। একরাশ হতাশা আর আতঙ্ক নিয়ে বন বস্তির মানুষ। কাজের অভাবে এই বনবস্তি থেকেই ৫০ জনের অধিক এখনো রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে।

প্রত্যেকের পরিবারে এখন শুধুই আতঙ্ক কেননা তাদের বস্তিবাসীর একজন আর কোনওদিনই ফিরবে না। দেহ বাড়িতে পৌঁছতেই রাভা সম্প্রদায়ের যাবতীয় রীতি রেওয়াজ মেনে শেষ করা হয় পার্থর অন্তিম কাজ। তবে এভাবে মাত্র বছর ২৫ এর যুবকের প্রাণ চলে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে এ মৃত্যুর দায় কার?