চাহিদা বাড়ছে কুশমণ্ডির মুখা শিল্পের, জীবন পাল্টাচ্ছে শিল্পীদের

Date:

Share post:

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ৫ জুলাই, দক্ষিণ দিনাজপুর: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের মহিষবাথান এলাকার মুখাশিল্প রাজ্য সহ সমগ্র দেশ জুড়ে জনপ্রিয়। দিন দিন জনপ্রিয় মুখা শিল্পের চাহিদা বাড়ছে। জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের দেউল গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত মহিষবাথান এলাকায় বিগত কয়েক বছরে এই মুখা শিল্পের ওপর ভিত্তি করেই জীবন জীবিকা গড়ে উঠেছে নতুন করে বহু মানুষের।

জানা গিয়েছে, অতীত কালে বছরের বিশেষ সময়ে ধান কাটার জন্য রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষজন বিশেষ পুজো আয়োজন করতেন। সেই সময়ই বিভিন্ন দেবদেবীর মুখা পরিধান করে গম্ভীরা নৃত্য করা হত। প্রাচীন এই রীতির কথা মাথায় রেখে মহিষবাথান এলাকার মানুষজন বংশ পরম্পরায় বহু যুগ ধরে মুখা তৈরি করে আসছেন। বর্তমানে আধুনিক যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে মুখার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ইতিমধ্যেই জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য এবং রাজ্য ছাড়িয়ে বিভিন্ন দেশে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডির মহিষবাথানের মুখা পৌঁছে গেছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মহিষবাথান গ্রামীণ হস্ত শিল্প কেন্দ্রে এলাকার মানুষজন মুখা তৈরির প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সারা বছর তৈরি করা মুখা বিক্রির সব রকম সাহায্য পেয়ে থাকেন।

এই বিষয়ে, মহিষবাথান এলাকার মুখা শিল্পী সাগুলাল সরকার বলেন, “মুখা শিল্পের উপর ভিত্তি করেই বহু বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করছি। রাজ্য সরকারের আয়োজিত বিভিন্ন মেলা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন বাজারে এমনকি পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশেও আমাদের তৈরি মুখা পৌঁছে যায়। আর সেকারণে দিন দিন মুখা শিল্পের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে”। উল্লেখ্য বর্তমান রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মুখা শিল্পের উন্নয়নে প্রথম থেকেই বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মুখা শিল্পীদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে শিল্প কেন্দ্রের উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে কুশমণ্ডি মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্প কেন্দ্রর ভবনটি ইতিমধ্যেই দোতলা করা হয়েছে। কুশমণ্ডি মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্পের সম্পাদক পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, “বর্তমানে মুখ শিল্পের ওপর ভিত্তি করেই শিল্পীদের জীবনযাত্রার মান পাল্টে গেছে। আমরা আশা করছি আগামীতে আরও উন্নতি হবে শিল্পীদের। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ও দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণার প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক ২টি নামি সংস্থার সাথে চুক্তি হয়েছে। জনপ্রিয় এই মুখ্য শিল্প সামগ্রিকভাবে আরও ব্যাপক পরিসরে বিদেশে রপ্তানি হবে খুব শীঘ্রই বলে আমরা আশাবাদী”।

একটা সময় প্রত্যন্ত এই এলাকার মানুষজনের দুবেলা খাদ্য সংস্থান করতেই হিমশিম অবস্থা হত। তবে রাজ্য সরকার পাশে থাকায় মুখাশিল্পের ওপর ভিত্তি করেই জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে বিগত কয়েক বছরে। সর্বোপরি বলাবাহুল্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডির মহিষবাথানে মুখা শিল্পের সাথে যুক্ত মানুষজনের জীবন পাল্টাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

Related articles

আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি পেভার ব্লকের রাস্তার কাজের সূচনা করলেন মন্ত্রী উদয়ন গুহ

কোচবিহার,১৭ এপ্রিল: ২ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৫৬০ মিটার পেভার ব্লকের পাকা রাস্তার কাজের সূচনা করলেন উত্তরবঙ্গ...

ফের ফালাকাটার লোকালয়ে জোড়া বাইসন হানা, আতঙ্কিত এলাকাবাসী

আলিপুরদুয়ার, ১৭ এপ্রিল: সাত সকালে জোড়া বাইসনের তাণ্ডব আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটায়। বাইসনের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন দুই গ্রামবাসী।...

ভারতীয় কৃষককে অপহরণ বাংলাদেশী দুষ্কৃতীদের,ফের বিএসএফের বিরুদ্ধে ক্ষোভ মন্ত্রী উদয়নের

দিনহাটা, ১৭ এপ্রিল: বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যুর পরে ক্ষেপে গিয়ে ভারতীয় কৃষককে তুলে নিয়ে যায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। এই...

অবশেষে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাত থেকে ভারতীয় কৃষককে উদ্ধার করল বিজিবি,সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ছবি

মনিরুল হক, কোচবিহার: দীর্ঘ টানা পোড়েনের মাঝে শেষ পর্যন্ত অপহৃত ভারতীয় কৃষক উকিল বর্মনকে বাংলাদেশিদের হাত থেকে উদ্ধার...