খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১৫ মেঃ পাকিস্তানি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি ভারতীয় সেনার কৃতিত্ব তুলে ধরেছিলেন। তার পর থেকেই ভারতীয়দের কাছে ‘হিরো’কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই অফিসারের উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে বিপাকে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ। ইতিমধ্যেই সেই রাজ্যের হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর। মধ্যপ্রদেশের মানপুর থানায় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের কথা জানিয়েছেন পুলিশের পদস্থ কর্তা। এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বিতর্কিত ওই মন্ত্রী।
সম্প্রতি মানপুরের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপির মন্ত্রী বিজয় শাহ বলেন,“ওরা আমাদের হিন্দু ভাইদের পোশাক খুলে ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করে হত্যা করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদিজি ওদের (জঙ্গিদের) বোনকে ওদের বাড়িতে হামলার জন্য পাঠিয়েছেন। ওরা (জঙ্গিরা) আমাদের বোনকে বিধবা করেছে,তাই মোদিজি ওদের সম্প্রদায়ের বোনকেই ওদের পোশাক খুলে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন।” তাঁর এই মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় ওঠে।
এদিকে বিতর্কের গন্ধ পেয়ে তড়িঘড়ি ক্ষমাও চেয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের এই মন্ত্রী। তিনি সুর বদলে বলেছিলেন, ‘আমাদের বোন সোফিয়া জাতি ও ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে ভারতের গৌরব বাড়িয়েছেন। তিনি আমাদের নিজের বোনের চেয়েও বেশি সম্মানিত। জাতির প্রতি তাঁর সেবার জন্য আমি তাঁকে স্যালুট জানাই।’তাঁর মন্তব্য সমাজ ও ধর্মকে আঘাত করলে তিনি দশবার ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত বলেও জানিয়ে দেন।
মন্ত্রী বিজয়ের এই মন্তব্য ভয়ানক এবং ক্যান্সারের মতো,পর্যবেক্ষণ ছিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের। অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর-এর নির্দেশও দিয়েছিল কোর্ট।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যের মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটওয়ারি বলেন,”আমরা মন্ত্রী বিজয় শাহের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছি৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের সেনাবাহিনীর বীরত্বকে স্যালুট জানিয়েছেন৷ এদিকে মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী সেনা আধিকারিক ও তাঁর বোনকে অপমান করছেন ৷ বিজেপি এখন নীরব কেন ? কেন ওই মন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বরখাস্ত করা হল না ? আমরা দেশের সব থানায় বিজয় শাহের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করব ৷”
এর পরেই সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব জানিয়েছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরেই বুধবার রাতে মধ্যপ্রদেশের মানপুর থানায় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের কথা জানিয়েছেন পুলিশের পদস্থ কর্তা। এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশের পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন এই মন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্টে কি তিনি স্বস্তি পাবেন ? এখন সব নজর সেই দিকেই।