মেহগনি কাঠের প্রতিমা, মুখোশের মণ্ডপ, জগদ্ধাত্রী পুজোয় বড় চমক চন্দননগরে

28

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১৮ নভেম্বর, চন্দননগরঃ কালী পুজো শেষ হতেই শুরু জগদ্ধাত্রী পুজো। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিশ্ব জোড়া নাম। শুধু হুগলি জেলা তথা রাজ্য নয় চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর খ্যাতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছেছে বিদেশেও। এবছর শুধু মণ্ডপ কিংবা শোভাযাত্রা নয়, জগদ্ধাত্রী পুজোর থিমও চমকে দেবে সকলকে। ঠিক যেমন প্রতিমায় চমক এনেছে বোড় চাঁপাতলা যুব সম্প্রদায় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি।

৬১ তম বর্ষে তাঁদের থিম ইতিহাসের ইতিকথা। মণ্ডপ সজ্জায় তুলে ধরা হয়েছে চন্দননগরের নানান ইতিহাস। পর্তুগীজ, ডাচ, ডেনিস, ফরাসি থেকে ব্রিটিশ উপনিবেশে এক সময় মিনি ইউরোপ ছিল গঙ্গার পশ্চিম পারে হুগলি জেলা। চন্দননগরে বাণিজ্যর জন্য এসেছিল তারা। বোড় চাঁপাতলার মণ্ডপসজ্জায় সেই সব ইতিহাসের কথাই তুলে ধরা হয়েছে।

মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে কাঠের প্রতিমা। প্রায় নয় মাস ধরে মেহগনি গাছের গুঁড়িকে কেটে নিখুঁতভাবে তৈরি হয়েছে এই প্রতিমা। তবে ওই মূর্তি পুজোর জন্য নয়। রীতি মেনে পুজোর জন্য তৈরি করা হয়েছে সাবেকি প্রতিমা। বোড় পঞ্চাননতলা সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর থিম ‘আস্তিক’। ধর্মীয় চেতনার প্রতি আস্থার ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপসজ্জায়।

এই মণ্ডপে ঢুকলে দর্শনার্থীদের অন্তরে জেগে উঠবে ভক্তিভাব। পিতলের সামগ্রী দিয়ে মণ্ডপের অন্দরসজ্জা হয়েছে। বোড় তালডাঙা জগদ্ধাত্রী পুজা সমিতির পুজোর থিম ‘অন্তরাল’। মানুষ লক্ষ্যপূরণের জন্য গিরগিটির মতো রং পরিবর্তন করছে। প্রতিটি মানুষ প্রয়োজন অনু্যায়ী মুখোশ পরে ঘুরছে। সেই মুখোশ দিয়েই সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। সেখানে ঘুরতে থাকবে বিশালাকার গিরগিটি। জগদ্ধাত্রীর সাবেকি সাজ।

গোটা চন্দননগরে একমাত্র গোড়া থেকেই ব্যতিক্রমী দৈবকপাড়া। কারণ এই বারোয়ারির প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে কোনও রকম ছাঁচের ব্যবহার হয় না। সম্পূর্ণ প্রতিমাই তৈরি হয় হাতে। তাই প্রতিছরই এই পুজোয় বদলে যায় জগদ্ধাত্রী প্রতিমার মুখ। এ বছর ৫১ বর্ষে চন্দননগর দৈবকপাড়া সার্বজনীনের থিম জ্যোতির্ময়ী। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো জগৎ বিখ্যাত। শুধু চন্দননগরেই দেড়শো পুজো হয়। বিশাল প্রতিমা, শোভাযাত্রা এবং আলোক সজ্জা-এই তিনই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বৈশিষ্ট্য। চন্দননগরের আলোর কারিকুরি দেখতেই রাজপথে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।