কার সমাধি আজও আঁকড়ে মদনাবতী গ্রামের বাসিন্দারা? জানুন ইতিহাস

0
133

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২৪ জুলাই, মালদা: ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটেছে। তবে থেকে গিয়েছে ইতিহাসের পাতায় নানান স্মৃতি। মালদার বামনগোলা ব্লকের মদনাবতী গ্রামে আজও রয়েছে ইংরেজ নীলকর সাহেব উইলিয়াম কেরির ছেলের সমাধি। সমাধি আঁকড়ে আজও মদনাবতী গ্রামের বাসিন্দারা।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা আজও ইংরেজ সাহেব উইলিয়াম কেরির ছেলে পিটার কেরির সমাধি যত্ন করে রেখেছেন। গ্রামের এক প্রান্তে পড়ে রয়েছে এই সমাধি।

মালদা জেলার নীলকুঠিগুলির মধ্যে অন্যতম কেরি সাহেবের মদনাবতী নীলকুঠি। মালদা দক্ষিণ দিনাজপুর সীমান্তবর্তী গ্রাম মদনাবতী। এই গ্রামে একটি বিশাল দিঘির পাড়ে আজও রয়েছে উইলিয়াম কেরি সাহেবের নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ। অবহেলায় অনাদরে পড়ে রয়েছে ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাস।

নীলকুঠি পুরোটাই ভেঙ্গে পড়েছে, আগাছায় ভরে রয়েছে চারিদিক। তারই মাঝে উঁকি মারছে কেরি সাহেবের নীলকুঠির দালানের ইট। নেই কোনও প্রশাসনিক উদ্যোগ, যার ফলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামের এই ইতিহাস। স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা আজও আগলে রয়েছে ব্রিটিশ শাসনের এই ইতিহাসকে। তবে রক্ষা করতে অনেকটাই ব্যর্থ, কারণ এতদিনেও প্রশাসনের তরফ থেকে কোনওরকম সংরক্ষণের ব্যবস্থাটুকু করা হয়নি।

মালদা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে বামনগোলা ব্লকের মদনাবতী গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে, কেরি সাহেবের নীলকুঠি। জেলার ইতিহাসবিদদের মতে, শ্রীরামপুরে যাওয়ার আগে প্রথম মদনাবতী নীলকুঠির দায়িত্বে ছিলেন উইলিয়াম কেরি। তিনি একজন খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারক ছিলেন। সে সময় মদনাবতী গ্রাম একেবারেই প্রত্যন্ত। এই এলাকার মানুষের শিক্ষা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে উন্নয়নের জন্য প্রথম কাজ করা শুরু করেছিলেন উইলিয়াম কেরি।

কথিত আছে উইলিয়াম কেরি এখানেই প্রথম ছাপাখানা তৈরির চেষ্টা করেন। বাইবেল বাংলায় অনুবাদ করার জন্য ছাপাখানা তৈরির প্রয়োজনীয়তা হয়েছিল। যদিও তা বাস্তবায়িত হয়নি। মদনাবতী গ্রামে থাকার সময় মারণ রোগে উইলিয়াম কেরি সাহেবের ছেলের মৃত্যু হয়। এখনও মদনাবতী গ্রামে সেই সমাধি রয়েছে। ছেলের মৃত্যুর পরেই এখান থেকে চলে যান উইলিয়াম কেরি।

স্থানীয় বাসিন্দারা কেরি সাহেবের এই নীলকুঠিকে বাঁচানোর আপ্রাণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের নজরে আনতে ও পর্যটকদের কাছে নীলকুঠিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রতিবছর শীতের মরশুমে গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে আয়োজন করা হতো মেলার।

কেরী সাহেবের নীলকুঠিকে ঘিরে এই মেলার আয়োজন করতেন স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা। কয়েক বছর ধরেই এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কেরি সাহেবের এই মেলায় দূর দূরান্তের বহু মানুষ আসতেন। তবে প্রশাসনের নজর তারপরও পড়েনি। এখনো অনাদরে পড়ে রয়েছে শাসনের জ্বলন্ত ইতিহাস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here