শিলিগুড়ি, ১৬ অক্টোবরঃ উত্তরবঙ্গবাসীর জন্য এক নতুন আধ্যাত্মিক কেন্দ্রের সূচনা হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়া ঘোষণায়। দার্জিলিঙের মহাকাল মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর তিনি জানান, শিলিগুড়িতেই গড়ে তোলা হবে এক বৃহৎ মহাকাল ধাম, যা হবে উত্তরবঙ্গের অন্যতম তীর্থকেন্দ্র। দিঘার জগন্নাথ ধাম ও দুর্গা অঙ্গনের আদলে এই মন্দির গড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“দার্জিলিঙের মহাকাল মন্দিরে অনেক বয়স্ক মানুষের পুজো দিতে অসুবিধা হয়। তাই আমরা শিলিগুড়িতে এমন এক মহাকাল মন্দির গড়ে তুলব, যেখানে থাকবে পূর্ণ সুবিধা গ্রীন কার, আলাদা প্রবেশপথ, ভক্ত ও পর্যটকদের জন্য আধুনিক পরিকাঠামো।”
তিনি আরও জানান, শিলিগুড়ির জেলাশাসক ইতিমধ্যেই জমি শনাক্তকরণের কাজ শুরু করেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মন্দির প্রাঙ্গণে থাকবে বৃহৎ শিবমূর্তি, ভক্তদের থাকার জন্য ধর্মশালা, লঙ্গরখানা, পার্কিং এরিয়া এবং পরিবেশবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা। রাজ্য সরকারের বিশ্বাস, এই মহাকাল ধাম উত্তরবঙ্গের আধ্যাত্মিক ও পর্যটন উন্নয়নে নতুন মাত্রা আনবে।
এই উদ্যোগ কেবল ধর্মীয় কেন্দ্র নির্মাণ নয়, বরং একটি বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। দিঘার জগন্নাথ ধামের মতোই এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত ও পর্যটকের আগমন সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে শিলিগুড়ি, তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে হোটেল, ব্যবসা ও পরিবহন খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দার্জিলিঙ পাহাড়ে সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর পর্যটন ক্ষেত্র খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা নতুন আশার সঞ্চার করেছে। শীত ও গ্রীষ্ম দুই মরসুমেই শিলিগুড়ি হয়ে ওঠে পাহাড়ের প্রবেশদ্বার। এবার সেই শহরই হয়ে উঠতে পারে এক নতুন তীর্থক্ষেত্র ও আধ্যাত্মিক কেন্দ্র।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মহাকাল ধামের সঙ্গে যুক্ত করা হোক সাংস্কৃতিক মঞ্চ, যোগ কেন্দ্র ও উৎসব আয়োজনের ব্যবস্থা, যাতে এটি শুধুমাত্র পুজার কেন্দ্র না থেকে একটি সার্বিক আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক পরিকাঠামো হয়ে ওঠে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা প্রমাণ করে, আধ্যাত্মিক উন্নয়নও রাজ্যের অগ্রগতির পরিকল্পনার অংশ। উত্তরবঙ্গে এই বিশাল মহাকাল ধাম গড়ে উঠলে, ভক্তি ও পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে যা মানুষকে যেমন শান্তি দেবে, তেমনই উন্নয়নেরও পথ দেখাবে।




