খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২১ জুলাই, কোচবিহারঃ স্থানীয় পুলিশ থাকা সত্বেও তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে বাড়ি ঘর ভাঙচুর হওয়া সিপিআইএম কর্মীদের বাড়ি দেখতে গিয়ে তৃণমূলের বাধার সম্মুখীন হলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে অসম ও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী তুফানগঞ্জ থানার অধীন বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ বালাভূত গ্রামে (৯/২৪৬ নং বুথে )।
সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এদিন অসম ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ঘরছাড়া সিপিআইএম কর্মীদের বাড়িতে যান। তাদের ওপর ঘটে যাওয়া অত্যাচারের কথা শোনেন। দক্ষিণ বালাভূতের বাসিন্দা আসমা বিবি বলেন, “আমি সিপিআইএম করি বলে আমাকে সামাজিক বয়কট করা হয়েছে। কোনো কাজ করতে দিচ্ছে না তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যখন তখন আমার ঘরে লোক ঢুকে পড়ছে। বাড়ি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাকে ধর্ষণ করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সেকথা আমি আজ সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে জানিয়েছি। পুলিশ থেকেও কিছু কাজ করছে না। ”
আলিমা বেওয়া নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, “আমার দোকান ভাঙচুর করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। আমাকে যখন তখন ভয় দেখানো হচ্ছে।” এদিন মহম্মদ সেলিম দক্ষিণ বালাভূত থেকে ফেরার পথে তৃণমূল থেকে কালো পতাকা দেখানো হয় বলে সিপিআইএমের অভিযোগ।
তবে তৃণমূলের বালাভূত অঞ্চল সভাপতি আফতার আলী ব্যাপারীর দাবি, এলাকার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে সিপিআইএম কর্মীরা তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। আর এদিন সাধারণ মানুষ কালো পতাকা ও মহম্মদ সেলিমকে দেখে গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছে। তৃণমূল কালো পতাকা দেখায়নি। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তিনি।”
মহম্মদ সেলিম এদিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের নানা প্রশ্ন করেন। পুলিশ যে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না তাও বলেন। এরপর তিনি উত্তর বালাভূত এলাকার ভাঙচুর হওয়া সিপিআইএমের দলীয় কার্যালয় ঘুরে দেখেন। মহম্মদ সেলিম বলেন, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বালাভূত এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়েছে সিপিআইএম কর্মীদের বাড়ি ঘর ও দোকানে। সিপিআইএম কর্মীদের ভয়ে অসম ও বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে হয়েছে। পুলিশ নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা কালো প্লাস্টিক ছিঁড়ে আমাকে দেখিয়েছে। গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছে। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা আদালতে যেতে বাধ্য হব।”
এরপর তিনি নাককাটিগাছ গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজারকুঠি এলাকার মফিজ উদ্দীন মন্ডলের বাড়িতে যান। তার ভেঙে যাওয়া পা কেমন রয়েছে, তা তার মুখ থেকে শোনেন। এদিন মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে বালাভূত পরিদর্শনে যান সিপিআইএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়, রাজ্য কমিটির সদস্য তমসের আলী, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা, পূর্ণেশ্বর অধিকারী, জেলা কমিটির সদস্য অসীম সাহা সহ অন্যান্যরা।