নবান্ন অভিযানে আক্রান্ত পুলিশকর্মী ও বিক্ষোভকারীদের সুস্থতার কামনায় কালীঘাটে পূজা অখিলভারত হিন্দুমহাসভার সদস্যদের

0
26

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১ সেপ্টেম্বরঃ সাতাশে আগষ্ট নবান্ন ঘেরাও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যখন রাজ্যজুড়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড। আক্রান্ত হলেন একাধিক পুলিশকর্মী এবং বিক্ষোভকারী, ইটের ঘায়ে সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তীর চোখ বিপজ্জনক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তখন সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে সারা দিন উপোস থেকে কালীঘাট মন্দিরে পূজা দিয়ে সকলের সুস্থতা কামনা করলো অখিলভারত হিন্দুমহাসভার সদস্যরা। আজ হিন্দু মহাসভার সদস্যরা মুকুন্দপুরের শঙ্কর নেত্রালয়ে উপস্থিত হয়ে চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া পুলিশ সার্জেন্ট দেবাশীষ চক্রবর্তী এবং ওনার স্ত্রীর সাথে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন এবং কালীঘাট মন্দিরের প্রসাদ দিয়ে দেবাশীষ বাবুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করলেন।

হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যে কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নিশ্চই আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। কিন্ত হিংসাত্মক আন্দোলন করতে গিয়ে কোন পক্ষের মানুষ যদি আক্রান্ত হন বা যদি কারো প্রাণ যায় তাহলে মানবতার ক্ষেত্রে তা অপূরণীয় ক্ষতি কারণ আর যাই হোক আমরা কারো চোখ, কোন অঙ্গ বা প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারবনা। সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনে আমরা দেখলাম জনৈক বলরাম ঘোষ নামের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি যখন সব তরুণ যুবক সদস্যরা সরে গেছিলেন তখন উনি ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে জল কামানের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে দৃঢ়তার পরিচয় দিলেন। এই রকম নীরবে কাজ করে যাওয়া সদস্যরা যে কোনো সংগঠনের সম্পদ। কিন্ত অধিকাংশ সংগঠনে এনাদের মত মানুষরা সম্মান পাননা।

সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্থবল আর লবিবাজি প্রাধান্য পায়। বলরাম বাবু কাউকে পাথর ছুঁড়ে বা ডান্ডা দিয়ে মারেননি।অথচ সেই একই আন্দোলনে আমরা দেখলাম কিছু মানুষ দুর্বৃত্তের মত পুলিশের গাড়িতে পাথর মারার ফলে আজ সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তীর চোখটা সারা জীবনের মত যেতে বসেছে। কেউ কি ওনার চোখ ফিরিয়ে দিতে পারবে ? মাথায় রাখা উচিত উনিও করো বাবা, করো ছেলে বা কারো ভাই। মহাভারতের যুগেও যুদ্ধক্ষেত্র বাদে যদি কৌরব বা পাণ্ডব পক্ষের সৈন্যদের দেখা হতো তাহলে ওনারা নিশ্চই পরস্পরের গ্রাম বা পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে কুশল বিনিময় করতেন।

কৌরব পক্ষের সমস্ত সৈনিক দ্রৌপদীর অপমান করেননি । পাণ্ডব পক্ষের সৈন্যরাও প্রাণ হারিয়েছেন ঠিকই কিন্তু সম্রাট হয়েছেন কেবলমাত্র যুধিষ্ঠির।কিন্তু কুরুক্ষেত্রে আঠেরো অক্ষৌহিনী সৈন্যের প্রাণ গেল কারণ ওনারা যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের নিজের ডিউটি পালন করছিলেন।দাবা খেলাতেও রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় কিন্তু সবার আগে বোরেকে এগিয়ে দেওয়া হয় যাদের পিছিয়ে আসার কোন উপায় থাকেনা। বর্তমানকালে রাজনৈতিক পরিস্থিতিও একই রকম।

তাই আমরা ছাত্র আন্দোলনে আঘাত পাওয়া আন্দোলনকারীদের যেমন দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি আবার সার্জেন্ট দেবাশীষ চক্রবর্তীর সাথেও দেখা করে, কালীঘাটের ফুল ও প্রসাদ দিয়ে প্রার্থনা করলাম যাতে মা কালী দ্রুত ওনার চোখ সরিয়ে দেন। বর্তমানকালে এই অস্থির অসহিষ্ণু রাজনৈতি পরিস্থিতিতে ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল হিন্দুমহাসভা নিঃসন্দেহে একটি আন্তরিক ও ইতিবাচক কর্মসূচির দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here