খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১৪ অগাস্ট, কলকাতাঃ জেনেরিক নামে ওষুধ লিখতে হবে প্রেসক্রিপশনে। এই নিয়ম না মানলে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)। এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বার বার বলার পরেও অধিকাংশ অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক এই নিয়ম মেনে প্রেসক্রিপশন লিখছেন না। তাই এ বার থেকে জেনেরিক নামে ওষুধ না লিখলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
তাঁর রেজিস্ট্রেশন সাময়িক ভাবে সাসপেন্ড করা হবে। ওষুধ কেনার পিছনে সাধারণ মানুষের খরচ কমানোর লক্ষ্যেই এই কড়াকড়ি। যদিও এনএমসি-র এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন। অভিযোগ, প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লেখার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছাড়া বাকিদের একটা বড় অংশ এখনও ওষুধের জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লিখছেন না।
গত ২ আগস্ট এনএমসির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাক্ষেত্রে বিশেষ করে ডাক্তারের লিখে দেওয়া ব্র্যান্ডেড ওষুধ কিনতে বিপুল টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ জেনেরিক ওষুধের দাম ব্র্যান্ডেডের চেয়ে ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ কম। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, সবাইকে প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম বড় হাতের লেখায় লিখতে হবে। এতে বুঝতে সুবিধা হবে। ভুল বোঝাবুঝি কম হবে। এছাড়াও সম্ভব হলে প্রেসক্রিপশন টাইপ করে প্রিন্ট করে দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশিকার পর চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন চিকিৎসকরা জেনেরিক ওষুধ লিখলে প্রকারান্তরে লাভবান হবেন ওষুধ বিক্রেতারা। কারণ, তাঁরা জেনেরিক নামের প্রেসক্রিপশন দেখে, নিজেদের পছন্দমতো ব্র্যান্ডের ওষুধই বিক্রি করবেন। তাতেও রোগীর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। চিকিৎসক মহলের দাবি, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে ‘ব্র্যান্ড নেম’-সহ ওষুধ তৈরি বন্ধ করতে হবে। তবেই জেনেরিক নামের ওষুধ লেখা প্রেসক্রিপশন কাজে আসবে।
বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সর্বভারতীয় সভাপতি শরদ আগরওয়াল বলেন, ‘‘এই নির্দেশ বাধ্যতামূলক করা হলে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ করব। কোন ব্র্যান্ডের ওষুধ বেশি ভাল কাজ করবে, সেটা এক জন চিকিৎসকই সব থেকে ভাল বোঝেন। যদি এই নিয়মকে কার্যকর করতেই হয়, তাহলে প্রতিটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাকে তাঁদের তৈরি ওষুধের গুণমানও যাতে এক থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককেই”।
উল্লেখ্য, পেটেন্ট বা স্বত্ব নেওয়া ওষুধকে ব্র্যান্ডেড জেনেরিক ওষুধ বলা হয়। যা নির্দিষ্ট ওষুধ সংস্থা প্রস্তুত করে এবং ব্র্যান্ডের নামে সেই ওষুধ বিক্রি করা হয়। আর যে ওষুধের পেটেন্ট থাকে, তা ১৫ বছর পরে জেনেরিক ওষুধের তকমা পেয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিতে রাসায়নিক সংমিশ্রণ না পালটে সেই ওষুধ তৈরি করতে পারে অন্য যে কোনও সংস্থা।