ভগ্ন কাঠের সেতু দিয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে পারাপার করছে সাধারণ মানুষ, কবে মিলবে কংক্রিটের ব্রিজ?

6

দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ১৭ জানুয়ারিঃ ভাঙ্গড় ১ নম্বর ব্লকের জাউলগাছি অঞ্চলের বামুনিয়া ও চন্ডিপুর এলাকায় দুটি কাঠের সেতুর বেহাল দশা। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য প্রতিদিন ভয়াবহ সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুগুলির অবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর যে, প্রতিটি পা ফেলতে হচ্ছে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, স্কুলের ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদেরও প্রতিদিন এই বিপজ্জনক সেতু পার হতে হচ্ছে। কাঠের সেতুর মাঝখানে বড় বড় গর্ত, দুই পাশে নেই কোনো রেলিং, সন্ধ্যার পর অন্ধকারে পরিণত হয় পুরো সেতু। এর ফলে ছোট-বড় সবার জন্যই বিপদ ডেকে আনছে এই ভগ্ন কাঠের সেতু।

এলাকাবাসীর দাবি, এখানে একটি স্থায়ী কংক্রিটের ব্রিজ তৈরি করা হোক। যাতে তারা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে। বহু বছর আগে নির্মিত এই কাঠের সেতুগুলি বছরের পর বছর খারাপ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সালাউদ্দিন সরদার জানালেন, “সেতু যখন তৈরি হয়েছিল তখন থেকেই এক বছর পর পর খারাপ হয়ে মেরামত করা হয়। কিন্তু মেরামতের পরেও এটি এক বছরের বেশি টেকে না। আমরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছি।”

অন্য একজন স্থানীয় বাসিন্দা মাজেদ আলী বৈদ্য বলেন, “প্রশাসনের লোকেরা বারবার ছবি তুলে নিয়ে গেছে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি। এই সেতু দিয়ে পারাপার করতে গেলে আমাদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে। বিশেষ করে বাচ্চাদের হাত ধরে পার করাতে হয়, কারণ একা পার হওয়া অসম্ভব। আমাদের দাবি, কংক্রিটের ব্রিজ বানানো হোক।”

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা রবিন মণ্ডল বলেন, “স্থানীয় নেতা ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা বারবার ছবি তুলে নিয়ে গেলেও বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি। সেতুর এমন ভগ্ন দশায় রাতে পারাপার আরও কঠিন হয়ে যায়। কারণ অন্ধকারে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”

এই সেতুগুলি দিয়ে প্রতিদিন গ্রামের শত শত মানুষ পারাপার করে। বাচ্চারা স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে। সন্ধ্যার পর সেতুতে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। রেলিং না থাকার কারণে সামান্য অসতর্কতায় মানুষ খালে পড়ে যেতে পারে। যেকোনো বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা মাথায় নিয়েই পারাপার করতে হয় এলাকাবাসীকে।

এই বিষয়ে জাউলগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাসলিমা বিবির স্বামী এবং জাউলগাছি অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রফিক আলী মোল্লা জানান, “দুটি সেতুর মেরামতের জন্য ইতিমধ্যেই অর্ডার পাস হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ থেকে মেরামতের কাজ শুরু হবে। এছাড়াও, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙ্গরের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা কংক্রিটের ব্রিজ নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, বলে জানান রফিক আলী মোল্লা।

তবে এলাকাবাসীর দাবি, বারবার মেরামত নয়, এখানে একটি স্থায়ী কংক্রিটের ব্রিজ তৈরি করতে হবে। কারণ কাঠের সেতু দীর্ঘমেয়াদে টেকে না এবং মানুষের জীবনের জন্য এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।