শীতলকুচিতে জমি বিবাদ ঘিরে আক্রান্ত পুলিশ কর্মী, গ্রেফতার ২, এলাকায় চরম উত্তেজনা

124

শীতলকুচি, ৩০ জুলাই: জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হল কোচবিহারের শীতলকুচি। বুধবার খলিশামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনারচালুন এলাকায় এক পুলিশ কর্মী আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগকে ঘিরে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দুই মাস ধরে আব্দুল খালেক আহমেদ এবং জোবেদ আলি ও তাঁর পরিবারের মধ্যে একটি জমি নিয়ে বিবাদ চলছে। সেই জমি বর্তমানে মাথাভাঙ্গা আদালতে বিচারাধীন। গতকাল ওই মামলার শুনানিতে আদালত কিছু পর্যবেক্ষণ পেশ করে, যা নিয়ে ফের উত্তেজনা তৈরি হয় দু’পক্ষের মধ্যে। বুধবার ওই জমিতে চাষ করতে যান জোবেদ আলির পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি জানতে পেরে আব্দুল খালেক আইন মেনে চলার স্বার্থে শীতলকুচি থানায় খবর দেন।

অভিযোগ,পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই জোবেদ আলির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তর্ক বাধে। সেই সময় এক পুলিশ কর্মীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। যদিও অভিযুক্তদের তরফে এখনো পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। পুলিশের পক্ষ থেকেও শুরুতে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও পরে বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়।

আব্দুল খালেক আহমেদ বলেন,“জমিটি নিয়ে মামলা চলছে কোর্টে। বিচারাধীন জমিতে একতরফা চাষ করার চেষ্টা করায় আমরা পুলিশে খবর দিই। কিন্তু পুলিশ এলে ওরা শুধু তর্কই করেনি, এক কর্মীকে মারধরও করে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

ঘটনার পরই কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, “এখন পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হলেন আবেদ আলী ও সাইদুল ইসলাম, দুজনেই সোনারচালুন এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হবে।”

পুলিশ সুপারের মন্তব্যে স্পষ্ট, জমি বিবাদ কিংবা যে কোনও ধরনের বেসামরিক সংঘর্ষে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেবে। বিশেষত, পুলিশ কর্তব্যরত অবস্থায় আক্রান্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, “জমি নিয়ে বিরোধ নতুন নয়। কিন্তু কোর্টে মামলা চলাকালীন একপক্ষের চাষ করা বা পুলিশকে হেনস্তা করার মতো কাজ একেবারেই কাম্য নয়।”

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শীতলকুচি থানার পুলিশ।