দক্ষিণ দিনাজপুর, ১৯ জুলাই : শুক্রবার রাতে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে একাধিক প্রসূতির অভিযোগ, বেশ কয়েকজন প্রসূতি মাকে একটি নির্দিষ্ট ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই তাঁদের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। প্রথমে একজন, তারপর একে একে আরও। কাঁপুনি, শ্বাসকষ্ট, অস্বস্তি হয় প্রসূতিদের।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রায় ৮ থেকে ১০ জন প্রসূতি মা একই ধরনের উপসর্গে আক্রান্ত হন। ঘটনা জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। শুক্রবার রাতেই হাসপাতালে পৌঁছান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ দাস। সঙ্গে ছিলেন অন্যান্য উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্যকর্তা ও বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনীও। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে হাজির হন বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই নেয়া হয় এই সতর্কতা।
তবে এ ঘটনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। রাতে হাসপাতালে পৌঁছন ডাঃ সুদীপ দাস এবং তিনি ভোর পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন। যদিও এখনো সরকারি ভাবে কেউ সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি না হলেও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। কী ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল, তার ব্যাচ নম্বর, কোম্পানির নাম, সংরক্ষণ ও প্রয়োগের পদ্ধতি সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পূর্ণ তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটেছে।
তবে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি রাজ্য স্তরেও রিপোর্ট আকারে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ সত্যি হলে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসনিক মহল সূত্রে খবর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৮ জন প্রসূতি মা কে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের পুরনো ভবনে সিসিইউ বিভাগের স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং যে সমস্ত ওষুধ রোগীদের দেওয়া হয়েছিল সেই সমস্ত ওষুধ ওষুধগুলোকে সংরক্ষণ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। আগামী সোমবার তদন্ত কমিটির বৈঠক রয়েছে সেদিন এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তরফ থেকে জানা গিয়েছে। বর্তমানে প্রসূতি মায়েদের অবস্থা স্থিতিশীল।




