বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ রুইডাঙার প্রধান, পাল্টে গেল পঞ্চায়েত সমীকরণ

13

কোচবিহার, ১২ সেপ্টেম্বর: দলীয় অসম্মান ও অবহেলার অভিযোগ তুলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন মাথাভাঙ্গা ২ নম্বর ব্লকের রুইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অশ্বিনী দেব সিংহ। শুক্রবার কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে নাম লেখান তিনি। এই যোগদানের মধ্য দিয়ে রুইডাঙা পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বদলে গেল।

রুইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ২৩টি। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল জিতেছিল ১০টি আসনে, আর বিজেপি ১৩টি আসনে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চায়েতের দখল ছিল বিজেপির হাতে। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই সমীকরণ পাল্টাতে শুরু করে। প্রথমে বিজেপির দুই জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর এবার প্রধান অশ্বিনী দেব সিংহও তৃণমূলের হাত ধরায় বিজেপির আসন নেমে এল ১০-এ, আর তৃণমূল বেড়ে দাঁড়াল ১৩ আসনে। এর ফলে রুইডাঙা পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রণ কার্যত তৃণমূলের দখলে চলে গেল।

অশ্বিনী দেব সিংহ যোগদান অনুষ্ঠানে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। মণ্ডল কমিটির সহ-সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বও সামলেছি। কিন্তু দলের মধ্যে প্রাপ্য সম্মান পাইনি। সাংগঠনিক কাজেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিলাম।”

তিনি আরও জানান, লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসন তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে চলে যাওয়ার পর থেকেই বিজেপির ভেতরে বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ বাড়ছিল। স্থানীয় স্তরে নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমে আসছিল। সেই অসন্তোষকেই কাজে লাগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ধীরে ধীরে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে।

কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামীণ উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে চলেছেন। তাতেই অনুপ্রাণিত হয়ে বিজেপি ছেড়ে আজ রুইডাঙার প্রধান তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আমাদের দলে যে সম্মান ও মর্যাদা তিনি পাবেন, তা নিশ্চিত।”

এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিজেপি সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, কয়েকজনের দলবদলেই সংগঠন দুর্বল হবে না। তবে বাস্তবে রুইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রণ হারানোয় চাপ বাড়ল জেলাজুড়ে বিজেপির ওপর।

উৎসবের মুখে এমন এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তনে রুইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনীতিতে তৈরি হল নতুন সমীকরণ। তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাফল্যকে জেলা রাজনীতিতে বড় বার্তা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।