৯ বছরের মেয়েকে পৈতে দিয়ে সমাজে অন্যতম নজির গড়লেন ঘোষপাড়া এলাকার সিদ্ধান্ত পরিবার

56

মালদা, ৯ ফেব্রুয়ারিঃ বর্তমান যুগে ছেলে আর মেয়ের মধ্যে কোন তফাৎ নেই বরং এখন সব ক্ষেত্রেই ছেলেদের থেকে মেয়েরা অনেক এগিয়ে রয়েছে। এই সমাজে সামাজিকভাবে মেয়েদেরকেও উঁচু আসনে রাখা হচ্ছে।এতদিন দেখা গিয়েছিল ছেলেদের পৈতে হতে কিন্তু এবারে সমাজের এই নিয়মকে একটু ব্যতিক্রমী করলো ইংরেজবাজার শহরের ঘোড়াপীর ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা সিদ্ধান্ত পরিবার। এই পরিবারের ছোট মেয়ে ৯ বছরের বয়সি মধুপর্না সিদ্ধান্ত উপবিত ধারণ করে ব্রম্ভজ্ঞন লাভ করেছে। অর্থাৎ ছোট মেয়েকে পৈতে দাওয়া হল। সমাজের এই চিন্তা ধারাকে পাল্টানোর এক নজির বিহীন ঘটনা সিদ্ধান্ত পরিবার করলেন।

পরিবারের সদস্যদের সবাইকে বার্তা দিতে চান ঘরের মেয়েকে পিছনে ফেলে রাখা চলবে না বর্তমানে ছেলে আর মেয়ের মধ্যে কোন তফাৎ নেই মেয়েদের কেউ সামাজিকভাবে উঁচু আসনে রাখা উচিত। ইংরেজবাজার শহরের ঘোড়াপীর ঘোষপাড়া এলাকায় বসবাস করেন মনোজ কুমার সিদ্ধান্ত তার দুই মেয়ে পরিবারের ছোট মেয়ে ৯ বছরের বয়সী মধুপরনা কে পৈতা ধারণ করে ব্রহ্ম জ্ঞান লাভ করালো।

মনোজ কুমার সিদ্ধান্ত দাবি করেন মালদা তথা উত্তরবঙ্গে এই প্রথম সামাজিকভাবে কোন মেয়ের উপনয়ন হল। তারা চান তাদের এই সিদ্ধান্ত সমাজের ছেলে ও মেয়ের সমান অধিকারের বার্তা ছড়িয়ে দিক। মনোজ বাবু ব্যবসার কাজে যুক্ত। তার স্ত্রী পায়েল সিদ্ধান্ত গৃহবধূ। তাদের দুই মেয়ে মধুপর্ণা ছোট, মধুশ্রী বড়।

মনোজ বাবুর স্ত্রী পায়েল সিদ্ধান্ত জানান, আমার দুই মেয়ে ছেলে নেই সমাজে চিন্তাধারা পাল্টানোর জন্য একসঙ্গে দুই মেয়ের পৈতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু বড় মেয়ে লজ্জায় পৈতে নিতে রাজি হয়নি। তাই ছোট মেয়েকে পৈতে দিলাম মেয়ে হয়তো এখনো পৈতার সঠিক অর্থ জানেনা।  এখন জামানা পাল্টাচ্ছে মেয়েরাও এখন সবকিছু দিক থেকে এগিয়ে। আগামী দিনে পড়াশোনার সাথে মেয়ে যদি পুরোহিত হতে চাই আমরা সব সময় সহযোগিতা করব। ছোট মেয়ে মধুপর্না ক্লাস থ্রিতে একটু বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করে। মেয়ের পৈতে দাওয়াত সিদ্ধান্তে প্রতিবেশী থেকে বাড়ির আত্মীয় স্বজন সকলেই সম্মতি দিয়েছে সকলেই মেয়েকে আশীর্বাদ করেছে।

ছোট মেয়ে মধুপর্না সিদ্ধান্ত জানান, আমার পৈতে নেওয়ার ইচ্ছে ছিল মা, বাবা আমার গুরুজন সবাই আমাকে আশীর্বাদ করেছে। অনেক ভালো লাগছে। পুজোপাঠ করতে আমি ভালোবাসি আমার বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে ইচ্ছে করে।

সিদ্ধান্ত পরিবারের পুরোহিত সদানন্দ বাগচী জানান, বৈদিক যুগে নারী পুরুষের কোন ভেদাভেদ ছিল না। তখন নারী ও যোগ্য উপবীত ধারণ করতেন। কিন্তু সমাজের কালো কিছু রীতি অথবা ব্রাহ্মণদের বার্ধবাথকতা ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন থেকে নারীদের ব্রাত্য করে রাখে। দিনের পর দিন নারীদের কার্যত শোষণ করে গিয়েছে পুরুষ। তবে বর্তমানে সমাজের পরিবর্তন হয়েছে মানুষের মানসিকতার ও পরিবর্তন হয়েছে। সিদ্ধান্ত পরিবারের এই যে সিদ্ধান্ত তাকে আমি সমর্থন করি।