দুবাইতে কাজে গিয়ে আটকে দক্ষিণ দিনাজপুরের দুই যুবক সহ রাজ্যের ১৩ জন, দেশে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস সুকান্ত মজুমদাদের

30

জয়দীপ মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুর: এজেন্টের মাধ্যমে দুবাইতে কাজে গিয়ে আটকে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের দুই যুবক সহ রাজ্যের ১৩ জন। জানা গিয়েছে, মোট পুনর্জন আটকে রয়েছে দুবাইতে তাদের মধ্যে দুজনের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ড বাণগড় কলোনিতে। সম্পর্কে তারা মামা ভাগ্নে। দেবাশীষ সরকার (২০)ভাগ্নে ও বিপ্লব সরকার(৩৩) মামা। পাশাপাশি বাকি দুজনের বাড়ি মালদা জেলা এবং বাদবাকিদের বাড়ি নদীয়া জেলায়।

সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১লা ডিসেম্বর মালদা জেলার নালাগোলার বাসিন্দা নৃপেন বিশ্বাস ও পাকুয়ার বাসিন্দা দীপক দাস তথা এজেন্টের মাধ্যমে তারা মুম্বাই এয়ারপোর্ট থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এই দুই মালদা জেলার এজেন্ট দুবাইতে আটকে থাকা ১৫ জনকে শপিং কমপ্লেক্সে কাজ দেওয়া হবে বলে পাঠাই এবং ১৫ জনের কাছ থেকে এই দুই এজেন্ট আড়াই লক্ষ টাকা করে নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এরপর তারা দুবাইতে পৌঁছানোর পরেই বুঝতে পারে তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে এবং সেখানে যাওয়ার পরই যারা কাজ দিবে তারাই এই ১৫ জনের কাছ থেকে তাদের পাসপোর্ট ও ভিসা কেড়ে নেয়। এবং তার সাথে সাথেই চলতে থাকে এই ১৫ জনের উপর অকথ্য অত্যাচার। এমনকি তাদের খেতে পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ জানিয়েছে দুবাইতে আটকে থাকা ওই ১৫ জন। বাড়ির লোকেদের বিষয়টি দুবাইতে আটকে থাকা ১৫ জন জানালে বাড়ির লোক চিন্তিত হয়ে পড়ে। অত্যাচারের সীমা সহ্য করতে না পেরে ও অভুক্ত থাকায় তারা একটি ভিডিও করে তাদের সমস্যার কথা ওই ভিডিওতে বলে এবং বাড়ির লোককে পাঠায়।

এরপরই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের ১৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা দুবাইতে আটকে থাকা দেবাশীষ সরকারের মা ও বিপ্লব সরকারের দিদির লক্ষ্মী সরকার ও তার পরিবারের লোকজনেরা শনিবার বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি ডঃ সুকান্ত মজুমদার এর সাথে দেখা করে সেই সমস্যার কথা জানায়। সুকান্ত মজুমদার সব কথা শুনে তিনি পরিবারের লোকজনকে আশ্বাস দিয়েছে আগামী সোমবার তিনি বিদেশ মন্ত্রকের সাথে কথা বলে অতি দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।

এবিষয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানান, “দুবাইতে আটকে থাকা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের দুই যুবকের পরিবারের লোকজনরা দেখা করে তাদের সমস্যার কথা জানায় এবং আমি তাদেরকে জানিয়েছি সোমবার আমি বিদেশ মন্তকের সাথে কথা বলে অতি দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবো”।

এবিষয়ে দুবাইতে আটকে থাকা দেবাশীষ সরকারের মা ও বিপ্লব সরকারের দিদি তথা গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মী সরকার জানান, “আমাদের দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। অর্থ সংকট রয়েছে,তাই বিদেশে কাজে গিয়েছে আমার ছেলে ও ভাই পাশাপাশি আমার স্বামী একজন গাড়ি চালক। তাই সংসারে হাল ধরতে বিদেশে পাড়ি দিয়েছে আমার ছেলে দুটো পয়সা রোজগারের জন্য। ঋণ করে আমি আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে ছেলেকে পাঠিয়েছি বিদেশে। এখন ভাবছি কি ভুলটাই না করলাম বিপদে রয়েছে আমার ছেলে ও ভাই। আমি অনুরোধ জানাচ্ছি আমাদের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার সহ বিদেশ মন্ত্রককে যে আমার ছেলে ও ভাই সহ ওই ১৩ জনকে অতি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হোক”।

দুবাইতে কাজে গিয়ে আটকে থাকা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরে দুই যুবকের পরিবারসহ রাজ্যের আটকে থাকা ১৩ জনের পরিবারের লোকজন যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। বিদেশ মন্ত্রকের উপর আস্থা রেখে ঐসব পরিবারের লোকজন এখন শুধু বাড়ির লোকদের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে।