বন্যজন্তুর মাঝে দাড়িয়ে একা হাতে দোকান চালিয়ে বাচ্চাদের মানুষ করতে লড়াই চালাচ্ছেন সুমিত্রা দেবী

0
19

সায়ন সেন, জলপাইগুড়িঃ একদিকে পাহাড়, জঙ্গল আরেকদিকে জাতীয়  সড়ক। এই বুঝি বন্যপ্রাণ সামনে এসে দাঁড়ালো। মনে ভয় লেগেই থাকে। তা সত্ত্বেও ভয়কে হার মানিয়ে বন্যজন্তুর মাঝে দাড়িয়ে একা হাতে দোকান চালিয়ে বুকে আগলে মানুষ করছেন এক মা তার দুই সন্তানকে। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি জেলার গরুমারা অভয়ারণ্যের অন্তর্গত চাপরামারি জঙ্গলের বুক চিরে যাওয়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের খুনিয়া মোড়ে।

প্রসঙ্গত, খুনিয়া মোড় নামটি শুনলেই হয়তো অনেকের গা ছমছম করে উঠবে। একদিকে মূর্তি হয়ে এসেছে জঙ্গল পথ অপরদিকে ভুটান সহ কালিম্পং জেলা থেকে জলপাইগুড়ি জেলায় প্রবেশের পথ। সব মিলিয়ে সদাব্যস্ত জাতীয় সড়কের একপাশে চার পাশ খোলা চালা ঘরে দোকান বনবস্তিবাসী সুমিতা শর্মার। বীরপাড়া, ঝালং, বিন্দু, জলঢাকার মতো পাহাড়ি পথ দিয়ে মালবাজার সহ অন্যান্য গন্তব্যে পৌঁছনোর মাঝে ক্ষণিকের বিশ্রাম সহ নাস্তার একমাত্র ভরসা সুমিত্রা শর্মার এই দোকানের চা, মোমো, ঘুগনি।

তবে বিগত কয়েক বছর ধরে বন্ধ মূর্তির সঙ্গে যোগাযোগ। কারণ কচ্ছপ গতিতে চলছে মূর্তি নদীর উপর সেতু নির্মাণ কাজ। অপরদিকে বেশ কয়েক মাস থেকে ধুলোয় ভরা চাপরামারি জঞ্জলের প্রবেশ পথ। এই সব প্রতিবন্ধকতায় কমেছে বন্য প্রাণীদের মাঝে দাঁড়িয়ে পর্যটক থেকে পথিকদের মুখে জল খাবার তুলে দেওয়া সুমিত্রা দেবীর বিক্রিবাট্টা। অথচ এই কাঠের উনুনের আগুনে তৈরি মোমো, চা, ঘুগনি বিক্রি করে সংসারের কষ্টের জাতাকল ঘুরিয়ে নিজের দুই সন্তানের পড়াশুনো চালিয়ে যাচ্ছেন হাসি মুখে।

জঙ্গলের মাঝে দোকান প্রসঙ্গে সুমিত্রা শর্মা জানান, “মাঝে মধ্যেই দোকানের সামনে চলে আসে বন্যজীব। তবে মুর্তি ব্রিজ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াত না থাকায় দোকানে বিক্রি অনেকটাই কমেছে।” এতো প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বাচ্চাদের মানুষ করতে হার না মেনে লড়াই চালাচ্ছেন সুমিত্রা দেবী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here