খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১ অগাস্ট, নয়াদিল্লি: তপশিলি জাতি বা উপজাতির মধ্যেও শ্রেণিবিভাজন বা ‘সাব-ক্লাসিফিকেশন’ করতে পারে রাজ্যগুলি। আজ সুপ্রিম কোর্টে সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এমনই যুগান্তকারী রায় দিল। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, তপশিলি জাতি এবং উপজাতিদের মধ্যে থেকে অনগ্রসরদের আলাদা করা যাবে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে সাত বিচারপতির বেঞ্চের তরফে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তফসিলি জাতি-জনজাতির মধ্যে শ্রেণি বিভাজনে সম্মতি দেওয়া হয়। পিছিয়ে পড়া শ্রেণি যাতে শিক্ষা ও চাকরিতে আরও সুযোগ পায়, তার জন্যই এই রায় বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তফসিলি জাতি-উপজাতির মধ্যে উপশ্রেণিকে সংরক্ষণ দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে রাজ্য সরকারের হাতে।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চের তরফে ২০০৪ সালের রায় খারিজ করে দিয়ে তফসিলি জাতি-জনজাতির মধ্যেও শ্রেণি বিন্যাসে সম্মতি জানানো হয়। ৭ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের ছ’জন বিচারপতিই তফসিলি জাতি-উপজাতির পুনর্বিন্যাসের পক্ষে রায় দিয়েছেন। বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী রায়ে বিরোধিতা করেছেন।
এর আগে ২০০৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ তফসিলি জাতি এবং উপজাতির মধ্যে আলাদা শ্রেণি বিন্যাসের দাবি খারিজ করে দেয়। সেসময় সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, তফসিলিরা সমশ্রেণিভুক্ত। তাই তাঁদের মধ্যে আলাদা শ্রেণিবিন্যাস করার কোনও অর্থ হয় না। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ৭ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, তফসিলি জাতি-উপজাতির মধ্যেও শ্রেণিবিন্যাস প্রয়োজন।
এই রায়ের ফলে দেশের সংরক্ষণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বদলে যেতে পারে। কারণ, এর পর কোনও রাজ্য চাইলে তফসিলি জাতি (SC) বা উপজাতিভুক্তদের (ST) শ্রেনিবিন্যাস করে আলাদা আলাদা শ্রেণির জন্য আলাদাভাবে সংরক্ষণ চালু করতে পারে। তফসিলিদের মধ্যে যারা বেশি অনগ্রসর তাঁদের জন্য দেওয়া হতে পারে বাড়তি সংরক্ষণ। তবে, সেক্ষেত্রে সার্বিক যে সংরক্ষণের মাত্রা সেটা পরিবর্তন করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, তফসিলি জাতি-জনজাতি এমনকি, ওবিসিদের মধ্যে ‘অতি পিছিয়ে পড়া অংশ’কে চিহ্নিত করে তাঁদের জন্য এসসি-এসটি কোটার মধ্যেই পৃথক সংরক্ষণের ব্যবস্থা চালু রয়েছে কয়েকটি রাজ্যে। বিহারেও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার ওবিসি এবং দলিতদের (এসসি) মধ্যে তুলনামূলক ভাবে বেশি পিছিয়ে পড়া অংশ ‘অতি অনগ্রসর’ এবং ‘মহাদলিত’ হিসাবে চিহ্নিত করে পৃথক সংরক্ষণের সুবিধার ব্যবস্থা করেছিল।