দীর্ঘ ১৭ কিলোমিটার রাস্তা কার্যত বেহাল অবস্থায়, সংস্কার নিয়ে চলছে রাজনৈতিক তরজা

0
33

বিশ্বজিৎ মন্ডল, মালদাঃ গ্রামে কোন অ্যাম্বুলেন্স ঢোকেনা, কেউ অসুস্থ হলে তাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে যেতে চরম অসুবিধার মধ্যে পড়ে গ্রামবাসীরা। এমনকি গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব যন্ত্রণা হলে রাস্তা দিয়ে যেতেই অনেকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। বাম আমলে তৈরি  হয়েছিল রাস্তা কিন্তু আজকে বিগত কয়েক বছর ধরে এই রাস্তার বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে সংস্কার হয়নি।

বিগত ১০ বছর ধরে পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। এমনই এক ছবি গাজোল ব্লকের দেওতলা থেকে চাকনগর যেতে ১৭ কিলোমিটার রাস্তা কার্যত বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রাস্তায় বড় বড় গর্ত এমনকি পাথর দেখা যাচ্ছে। যদিও বিজেপির প্রধানের অভিযোগ, শাসকদল যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেস সেক্ষেত্রেই এলাকায় কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। রাস্তার কাজও সংস্কারের হচ্ছে না। বহুবার ব্লক প্রশাসন জেলা পরিষদকে বলেও কাজ হয়নি।

অন্যদিকে গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পাল্টা দাবি, ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পরিষদের এই রাস্তা সংস্কারের জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে খুব শীঘ্রই এই কাজ করা হবে এলাকার বিজেপির বিধায়ক থেকে সাংসদদের দেখা যায় না।

জানা যায়, গাজোল ব্লকের দেওতলা থেকে চাকনগর প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে চলাফেরার উপযুক্ত নয়। জীবনে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হয় গ্রামবাসীদের। টোটো থেকে অটো, ম্যাজিক গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে যেতে প্রায় বিপদের মুখে পড়ে।

এবিষয়ে চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জাজিল পাড়ার গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, বহু বছর ধরে এই রাস্তার সংস্কার হয় না। বেহাল অবস্থায় পরে  রয়েছে।  স্কুলে বাচ্চাদেরকে পাঠানো যায় না। কেউ অসুস্থ হলে এমন কি গর্ভবতী মহিলাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অ্যাম্বুলেন্সও গ্রামে ঢুকে না।

আজকে রাজ্য সরকার যেখানে বলছে বাংলা নাকি এগিয়ে। সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রশ্ন আমাদের এই গ্রামের রাস্তা দেখলে বাংলা এগিয়ে আছে কিনা সেটা বোঝা যাবে। আজকে আমরা বিজেপিকে সমর্থন করেছি,বর্তমানে গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। সেখানে শাসক দলের সঙ্গে বিজেপির লড়াই রয়েছে কিনা সেটা আমরা বুঝতে পারছি না কারণ রাস্তা তো সংস্কার হচ্ছে না। ভোটের সময় জনপ্রতিনিধি আসে ভোট নিয়ে যায় কিন্তু রাস্তার কথা বলতে গেলেই বলে হয়ে যাবে, কিন্তু সেটা এখনো হচ্ছে না।

চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান দিপু ওরাও জানান,আজকে জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে, প্রশাসনের আমলারাও তৃণমূলের কথা শুনছে সে ক্ষেত্রে চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতটা বিজেপি দখলে রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে তারা এলাকায় কোন কাজ করছে না। এই রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। আমরা পঞ্চায়েত থেকে বহুবার ব্লক প্রশাসন জেলা প্রশাসন জেলা পরিষদকে জানিয়েছি কিন্তু তাতেও তাদের কোন ভূমিকা দেখতে পাচ্ছি না। যদি এই ভাবেই চলতে থাকে তাহলে আগামী দিনে গ্রামবাসীদের একত্রিত হয়ে বিডিও জেলা পরিষদ ও জেলা শাসকের অফিস ঘেরাও করে বৃহত্তর আন্দোলন করবো।

যদিও বিজেপির প্রধানের এই অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তি বলে দাবি করেছেন গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন। তিনি জানান,রাস্তার সমস্যা রয়েছে,দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয় না ঠিকই, এতে মানুষের চলাফেরার কষ্ট হচ্ছে। তবে আজকের বিজেপির এমএলএ,বিজেপির এমপি তারা কেন এই রাস্তার কাজ করছে না তাদেরকে এলাকায় দেখা যায় না। আমরা ইতিমধ্যেই এই রাস্তা সংস্কারের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে জানিয়েছি, আশা করি খুব শীঘ্রই এই রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here