ঝাড়খণ্ডে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে তিন মাওবাদী নিহত, উদ্ধার বিপুল অস্ত্র

23

খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২৫ সেপ্টেম্বরঃ ফের মাওবাদ দমন অভিযানে বড় সাফল্য পেল নিরাপত্তারক্ষীরা। ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলার কেচকি গ্রামের জঙ্গলে সংঘর্ষে মৃত্যু হল তিন মাওবাদী নেতার। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দীর্ঘ গুলির লড়াই শেষে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র। নিহতরা নিষিদ্ধ গোষ্ঠী জেজেএমপি এর সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে গুমলার কেচকি গ্রামের নিকটবর্তী জঙ্গলে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। তল্লাশির সময় হঠাৎই সামনে পড়ে যায় মাওবাদীরা। নিরাপত্তারক্ষীদের দেখেই মাওবাদীরা গুলি চালাতে শুরু করে। পালটা জবাব দেয় বাহিনীও। প্রায় আধঘণ্টারও বেশি সময় ধরে গুলির লড়াই চলে দুই পক্ষের মধ্যে। শেষপর্যন্ত গুলিতে মৃত্যু হয় তিন মাওবাদীর।

ঝাড়খণ্ড পুলিশের মুখপাত্র মাইকেল রাজ এস জানান, “নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন মাওবাদী নিহত হয়েছে। তারা জেজেএমপি গোষ্ঠীর সদস্য ছিল। ঘটনাস্থল থেকে বহু আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ এবং নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।” পুলিশের অনুমান, নিহতদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সংগঠনের স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ভারতকে মাওবাদমুক্ত করা হবে। সেই লক্ষ্যে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানার মাওবাদ অধ্যুষিত এলাকায় জোরদার অভিযান চলছে। গোয়েন্দাদের মতে, বর্তমানে ছত্তিশগড়–তেলেঙ্গানা সীমান্তবর্তী কারেগুট্টা পাহাড়ি অঞ্চল মাওবাদীদের অন্যতম ঘাঁটি। সেখানে গত ২১ এপ্রিল থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই অঞ্চলে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে নিহত হয়েছে ৩১ জনেরও বেশি মাওবাদী।

এছাড়া, মাওবাদ দমনে বড় সাফল্য হিসেবে সম্প্রতি নিরাপত্তারক্ষীরা খতম করেছে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বাসবরাজুকে, যার মাথার দাম ছিল প্রায় ১.৫ কোটি টাকা। একই অভিযানে মৃত্যু হয়েছে মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুধাকরেরও।

অভিযান পরিচালনাকারী এক আধিকারিকের কথায়, “মাওবাদীদের কার্যকলাপ দমন করা এখন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যৌথ বাহিনী নেমেছে। শুধু ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানার সীমান্ত ঘেঁষা এলাকাতেই প্রায় ২০ হাজার আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে।”

এদিনের অভিযানে তিন মাওবাদীর মৃত্যুর ঘটনায় নিরাপত্তারক্ষীদের সাফল্যে উৎসাহিত হয়েছে গোটা বাহিনী। পুলিশের ধারণা, এই ঘটনার ফলে জেজেএমপি-র কার্যক্ষমতা বড়সড় ধাক্কা খাবে। তবে এখনও জঙ্গলে সক্রিয় বহু মাওবাদী। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান জারি থাকবে বলেই জানিয়েছে পুলিশ।