খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১৮ অগাস্ট, ইম্ফলঃ ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুর। শুক্রবার সকালে সে রাজ্যের উখরুল জেলায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে গুলির লড়াইও। লড়াই থামার পর দেখা যায় কুকি অধ্যুষিত থোয়াই গ্রামের তিন বাসিন্দাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে ওই তিনজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার পর নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে মণিপুরে।
কুকি সংগঠনগুলির দাবি, মেইতেইরা খুন করেছে ওই তিনজনকে। মৃত তিন যুবকের নাম জামখোগিন হাওকিপ, থাঙখোকাই হাওকিপ এবং হ্যালেনসন বাইতে। উখরুলের পুলিশ সুপার এন ভাশুম জানান, গ্রামের পূর্ব দিকে অবস্থিত পাহাড়ি এলাকা থেকে কয়েকজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী গ্রামে ঢুকে পড়ে এবং গ্রামের রক্ষীদের ওপর এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। তখনই গুলিবিদ্ধ হয় গ্রামের তিন বাসিন্দা।
ঘটনার পর থেকেই গ্রামে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে চলছে দুষ্কৃতীদের তল্লাশি। এর আগে চলতি মাসের ৫ তারিখে বিষ্ণুপুর এবং চুরাচাঁদপুরে দুটি পৃথক ঘটনায় তিনজন মেইতেই এবং দু’জন কুকিকে হত্যা করা হয়। প্রায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে সাম্প্রদায়িক হিংসায় জ্বলছে মণিপুর। অশান্তির জেরে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১৬০ জন এবং ঘরছাড়া হয়েছেন পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
গত ১০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব বিতর্কে বলেছিলেন, সরকার মণিপুরে দ্রুত শান্তি ফেরাতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মণিপুরে শান্তি অনেকটা ফিরেছে। গত কয়েকদিন রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেনি। সেই ভাষণের তিনদিনের মাথায় ফের অশান্তি ছড়াল মণিপুরে।