খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২৭ নভেম্বর, কলকাতা: ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে শোকজ করল তৃণমূল। দলের বিধানসভা শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির তরফে বুধবারই শোকজ করা হয়েছে হুমায়ুনকে। সূত্রের খবর, তাঁর কাছে যে চিঠি পাঠানো হচ্ছে তাতে লেখা রয়েছে, তিনি প্রকাশ্যে যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে দল বিড়ম্বনায় পড়েছে। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। কেন তিনি এই মন্তব্য করেছেন, তা জানাতে বেঁধে দেওয়া হয়েছে তিনদিনের সময়।
দলের একাংশ নেতার বিরুদ্ধে আলপটকা মন্তব্য করার অভিযোগ উঠছিল। এই তালিকায় প্রথমেই নাম ছিল হুমায়ুনের। বস্তুত, এ ব্যাপারে লাগাম টানতে মঙ্গলবার তিনটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গড়ে দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার কালীঘাটে মমতার বাড়িতে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ছিল।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মমতা স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, দলের নেতারা চাইলে যেখানে খুশি যেতে পারবেন। কিন্তু দল নিয়ে যা খুশি তা-ই বলতে পারবেন না। এই দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে তাঁকে প্রথমে শো কজ় করা হবে। সংশ্লিষ্ট নেতাকে জবাব দিতে হবে। কাউকে তিনবার শোকজ করা যাবে। না শুধরালে এরপর সংশ্লিষ্ট নেতাকে দল সাসপেন্ড করবে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এরপরও মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে দেখা গেছে নিজস্ব মেজাজে। হুমায়ুন বলেছেন, “অন্যায় হলে আমাকে তো বলতেই হবে। আমি কাউকে ভয় ডর করি না।” এমনকী মমতার ঘনিষ্ঠরা দলনেত্রীর ভাল চান না বলেও প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন তিনি। ফিরহাদ হাকিম, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়দের নামোল্লেখ করে হুমায়ুন এও বলেন, “প্রভাবশালীরা আমাকে মার্ডার করে ফেলতে পারে।”
তিনি এও বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কয়েক জন ঘিরে রয়েছেন, যে ক’জন নিজেদের পরিকল্পনার মধ্যে রেখেছেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কতটা ভাল চান, পশ্চিমবঙ্গের শাসক হিসাবে তাঁকে দীর্ঘমেয়াদে দেখতে চান কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, যাঁরা দলটাকে গুলিয়ে দিতে চাইছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের জায়গা ঠিক রাখতে চাইছেন, কানে মন্ত্রণা দিচ্ছেন, ২০২৬ সালে তাঁরা জবাব পাবেন। আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা মানি। তৃণমূল যদি আগামী দিনে আমাকে টিকিট না দেয়, বেঁচে থাকলে অপকর্মের জবাব দেব।’’ হুমায়ুনের ওই মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলকে।
বুধবার বিধানসভায় এসেছেন হুমায়ুন। বিধায়ক জানিয়েছেন, তিনি বিধানসভায় এসেই শো কজ়ের কথা জানতে পেরেছেন। শো কজ় নিয়ে হুমায়ুন বলেন, ‘‘শুনেছি আমাকে শো কজ় করা হয়েছে। তবে হাতে কোনও চিঠি পাইনি।’’