কোচবিহার, ২৭ সেপ্টেম্বরঃ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের অন্তর্গত সমস্ত বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষিকার জন্য সচিত্র পরিচয় পত্রের ব্যবস্থা করা সহ আট দফা দাবিতে ডিপিআরসি স্মারকলিপি দিলেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাইমারী টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। এদিন তারা কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে এসে চেয়ারম্যান রজত বর্মার সাথে দেখা করে ও কথা বলেন এবং তার হাতে ৮ দফা দাবির স্মারকলিপি তুলে দেন। এদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাইমারী টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন কোচবিহার জেলার সভাপতি অশেষ বসাক, হানিফ শিকদার, সুবীর দে, প্রশান্ত দে, সত্যজিত নারায়ন, প্রবীর সুত্রধর, জুলফিকার আহমেদ, পার্থ দেবনাথ, অনিমেষ ঘোষ সহ জেলার বিভিন্ন সার্কেলের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতৃত্বরা।
তাদের মূলত দাবিগুলি হল, ১) জেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন যাবৎ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে বিদ্যালয় গুলির যাবতীয় কাজ পরিচালিত হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও প্রবীণতার নিরিখে পর্যালোচনার মাধ্যমে সেই সব বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দাবি রাখছি।
২) কোচবিহার জেলার বিভিন্ন সার্কেলের বেশ কিছু বিদ্যালয়ে আরটিই-০৯ অনুযায়ী একদিকে যেমন ছাত্র অনুপাতে শিক্ষক বেশি সংখ্যক পরিমাণে নিযুক্ত রয়েছে, অপরদিকে ঠিক উল্টো চিত্রটাও ফুটে উঠেছে, যেখানে ছাত্র অনুপাতের শিক্ষক অনেক কম সংখ্যক পরিমাণে কর্মরত রয়েছেন। সে ক্ষেত্রে ছাত্র শিক্ষক অনুপাতের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে উদ্বৃত্ত শিক্ষকদের সারপ্লাজ এডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে সঠিক পুনঃবিন্যস্ত করে প্রতিটি বিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ঠিক করে রাখার পাশাপাশি সুন্দর আনন্দদায়ক পঠন পাঠনের পরিবেশ তৈরি করার ব্যবস্থা করা হোক।
৩) বিগত কিছু বছরে শিক্ষার স্বার্থে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে স্টপ গ্যাপ হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অন্য বিদ্যালয়ের নিযুক্ত করা হয়েছিল। এমতাবস্থায় সেই সব শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিজের বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠানো হোক বা বর্তমান বিদ্যালয়ে স্থায়ী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হোক।
৪) ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের ছয়-সাত মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও জেলার কোন বিদ্যালয়ে স্কুল কমপোজিট গ্রান্ডের টাকা ক্রেডিট হয়নি। সে ক্ষেত্রে জেলার সব বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে প্রতিটি বিদ্যালয়ের স্কুল কমপোজিট গ্রান্টেড প্রাপ্য বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা করা হোক।
৫) জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের অন্তর্গত সমস্ত বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষিকার জন্য সচিত্র পরিচয় পত্রের ব্যবস্থা করা হোক। সচিত্র পরিচয় পত্রের অভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
৬) জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড এর প্রত্যেক শিক্ষক শিক্ষিকার জমানো টাকা হিসেবে অবিলম্বে স্থায়ীভাবে অনলাইনে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করা হোক। এতে প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিজের জমানো টাকার হিসেব নিজের মতো দেখতে পাবে পারবে অথবা প্রতিবছর জিপিএফের জমানো টাকার হিসাব অফলাইনে ডিপিএসসি মারফত পেতে পারে।.
৭) শিক্ষিকা-শিক্ষকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্যালারি স্লিপ এর প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে এসআই অফিসে আবেদনের মাধ্যমে পাওয়া যায়, যা অনেকটাই সময় সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। সেই ক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পে-স্লিপ অনলাইন থেকে সরাসরি নিজেরাই যেন পূর্বের মতো সেলফ ডাউনলোড করতে পারে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
এবং ৮) অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে অবসরের দিন তাদের যাবতীয় প্রাপ্য পেয়ে যান এবং যথাসময়ে পেনশন প্রদান করা যায় সেই কাজ যেন দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা করা হোক। এই সব বিষয় নিয়ে আজকের কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রজত বর্মার হাতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।