খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২০ আগস্টঃ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারকে পরাস্ত করতে এক জোট হয়েছে দেশের প্রধান বিরোধী দলগুলি। বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের জন্য ইতিমধ্যেই জোট গড়েছে বিরোধীরা। সেই জোটের নাম রাখা হয়েছে ইন্ডিয়া। ইতিমধ্যেই ওই জোটের ২টি বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এই জোটের পর কোন রাজ্যে কে কাকে আসন ছাড়বে এবং দলগুলির মধ্যে আসন রফা কী ভাবে হবে তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে।
ইন্ডিয়া জোট গঠনের পর বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে যৌথ কর্মসূচি এক সঙ্গে পালন করতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলগুলিতে। সংসদে সেই চিত্র ধরা পড়েছে। কিন্তু নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। তৃণমূলের তরফে আসনে লড়া নিয়ে কোনও ঘোষণা না করা হলেও রাজ্যের ৪২টি আসনেই লড়াই করার কথা শোনা গিয়েছে ঘাসফুল শিবিরের নেতৃত্বের মুখে।
সেই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভা কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস নিজেদের মতো লড়াই করছে। আমাদের অবস্থান যদি বদল হয়,তাহলে তা সবাই দেখতে পাবেন। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস চালান। তিনি নিজের দলের জন্য ৪২টি আসন চাইতে পারেন আবার ৪২০ টাও চাইতে পারেন। তবে কংগ্রেস কোনও রাজ্যে আসন ছেড়ে দিয়ে লড়াই করবে বলে জানি না আমি।’ এর আগে রাজ্যকে ‘পুকুর’ এবং দেশকে ‘নদী’ আখ্যা দিয়ে অধীর বলেছিলেন, এখন পুকুরের থেকে বেশি নদীর কথা ভাবতে হচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘এরাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে সব ভোট যেন তৃণমূলের কাছে আসে’। এই পরিস্থিতিতে অধীর চৌধুরীর বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, এই রাজ্যে তৃণমূলের থেকে বামেদের বেশি কাছে কংগ্রেস। আবার জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে সোনিয়া-মমতা রসায়ন পৃথক। এই আবহে বাংলায় কংগ্রেসের নীচি তলার কর্মীরা কোনদিকে যাবেন ? এদিকে বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়া জোট গঠনের আগেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাতে বহু কংগ্রেস কর্মীর রক্ত ঝরেছিল। এদিকে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জেতা বিধায়ক তৃণমূলে গিয়ে যোগ দেন। সব মিলিয়ে এ রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের তিক্ততার অন্ত নেই। এই আবহে রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন অধীর।
অধীরের এই কথার রাজনৈতিক তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের তরফে একটি কথা প্রায়শই শোনা যায়- যে আঞ্চলিক দল যেখানে শক্তিশালী সেখানে তারা লড়াই করবে। তৃণমূল সুপ্রিমোর মুখে এ কথা শোনা গিয়েছিল অতীতে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে কংগ্রেস লড়াই করবে আগামী লোকসভা নির্বাচনে। সেই বার্তায় আজ অধীর দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।