খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ১৯ জুলাই, তুফানগঞ্জ: ২১শে জুলাই দলনেত্রীর ভাষণ শুনে ফেরার পথে মৃত্যু হয়েছিল তুফানগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সহেন্দ্র দাসের। তারপর কেটে গিয়েছে ৮ বছর। কেউ পাশে থাকা তো দূর, পরিবারের রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুর শংসাপত্রটুকুও হাতে পাননি স্ত্রী। ফলে সরকারি সুযোগ-সুবিধে থেকে বঞ্চিত রয়েছে পরিবারটি। প্রতিবছর ২১ জুলাই এলেই স্বামীর স্মৃতিতে চোখের জল ফেলেন স্ত্রী গীতিকা দাস।
তুফানগঞ্জ-২ এর শালবাড়ি-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্জিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন সহেন্দ্র দাস। ২০১৫ সালের ২১ জুলাই রামপুরহাট স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইনের ধারে ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। সে সময় জেলার প্রথম সারির নেতারা মৃতদেহ পৌঁছে দিয়ে যান বাড়িতে। পরবর্তীতে দলের তরফে আর্থিক সহযোগিতা ও ছেলের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ঠিকই, শেষ পর্যন্ত কথা রাখেনি দল।
বাবার মৃত্যুর নয় মাসের মাথায় বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় সহেন্দ্র দাসের বড় ছেলের। আরও সমস্যার পড়ে পরিবারটি। ফলে বাধ্য হয়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে দিনমজুরির কাজ শুরু করেন মৃত তৃণমূল সমর্থকের ছোট ছেলে সুরজিৎ দাস।
মৃতের স্ত্রী গীতিকা দাস জানান, ‘প্রতিবছর একুশে জুলাই এলেই তাঁর স্বামী ধর্মতলার উদ্দেশ্যে রওনা দিতেন। একুশে জুলাই এলেই স্বামীর স্মৃতি মনে পড়ে যায়। তবে আট বছরে কেউ খোঁজ রাখেনি। মৃতের ছোট ছেলে সুরজিৎ দাস জানান, বাবার মৃত্যুর সার্টিফিকেটের জন্য দলীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে শুধুই অপমান জুটেছে।
যদিও এ বিষয়ে কোচবিহার জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দীপঙ্কর লায়েক জানান, শহিদ সমাবেশে পৌঁছে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর মৃত্যু সার্টিফিকেট বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
আবার একটি একুশে জুলাই এসে গিয়েছে। শুক্রবার লক্ষ লক্ষ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের স্লোগান ও ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠবে কলকাতার ধর্মতলা চত্বর। তবে এই মহাযজ্ঞের বিপুল আয়োজনে হয়তো এবারও উপেক্ষিত থেকে যাবে মৃত তৃণমূল সমর্থক সহেন্দ্র দাসের পরিবার।