“দলেরই লোকের হাতে খুন হতে পারি”-মালদায় তৃণমূল প্রধান শামসুন নেহারের বিস্ফোরক অভিযোগ

12

মালদা, ১৪ অক্টোবরঃ তীব্র রাজনৈতিক অশান্তির আবহে এবার খুনের আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের ঘনিষ্ঠ অনুগামী ও কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শামসুন নেহার। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানিয়েছেন, দলেরই একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং যে কোনও সময় তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা হতে পারে। আতঙ্কে তিনি কার্যত গৃহবন্দী, এমনকি পঞ্চায়েত কার্যালয়ে যেতেও ভয় পাচ্ছেন।

শামসুন নেহারের অভিযোগ, কংগ্রেস থেকে সাতজন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব বেড়েছে। সরকারি প্রকল্পে ‘কাটমানি’ দাবি নিয়ে শুরু হয় বিরোধ। বিশেষত আবাস যোজনার অনুমোদনে কাটমানি তুলে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তিনি ও তাঁর স্বামী নাসির আহমেদ ওরফে সাগর এর প্রতিবাদ করেছিলেন। এরপরই গত বৃহস্পতিবার বৈঠকের অজুহাতে পঞ্চায়েত দপ্তরে নাসির আহমেদের উপর হামলা হয়। অভিযুক্ত হিসেবে তিনি নাম করেছেন ফেকু মোমিন ও নাসির আহমেদ সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে দাবি। গুরুতর জখম অবস্থায় বর্তমানে নাসির আহমেদ একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।

প্রধানের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কংগ্রেসের সঙ্গে গোপন যোগসাজশ করে তাঁকে এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে তৃণমূলের ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা চলছে। তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন, কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা তীব্র হয়েছে। বিজেপির মালদা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় কটাক্ষ করে বলেন, “তৃণমূল এখন সন্ত্রাসের দল। মুখ্যমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে নেই, পুরো দল সিন্ডিকেটে পরিণত হয়েছে।” এ ঘটনায় জেলা রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়ালেও, প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র।