২০১৯-এর বদলা নিন, আগামী ১৯ এপ্রিল! কোচবিহারে এসে নিশীথকে হারানোর বার্তা অভিষেকের

0
48

মনিরুল হক, কোচবিহারঃ “২০১৯-এর বদলা নিতে হবে আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার ভোটের দিন।” এদিন কোচবিহারের ছাগলবেড়েতে তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার সমর্থনে জনসভা করতে এসে এমনটাই জানালেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ওই সভায় মানুষের জন সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। ওই ভরা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ও বিজেপিকে নিশানা করেন তিনি। কারন গত ২০১৯ সালে নিশীথ প্রামাণিক জয়ী হওয়ার পর ৫ বছরে কোন কাজ কর্ম করতে পারেন নি। বিজেপি এবার তাকে কোচবিহার লোকসভা আসনে প্রার্থী করেছেন।

সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নিশীথকে নিশানা করে বলেন, ‘২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলার মানুষ তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়নি। কিন্তু তারপর যেই বিজেপি জিতল, বাংলার টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে গেল। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কোচবিহারে তৃণমূল প্রার্থী জিতেছিল। ততদিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কোনও সমস্যা হয়নি। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় থাকলেও বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ করতে পারেনি। কারণ জেলায় তৃণমূলের হাত শক্ত ছিল। কিন্তু এরপর থেকেই বঞ্চনা শুরু হল। ১৯ সালে যেই নিশীথ প্রামাণিক জিতল, সঙ্গে সঙ্গে বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ হয়ে গেল। বিজেপি শুধু বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে। বাংলা বিরোধীদের তাই শিক্ষা দিতে হবে। শেষ ৫ বছর কোচবিহারের জনগণকে ঠকিয়েছে বিজেপি। দরকারের সময়ে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এখন ভোটের আগে গ্যারেন্টির কথা বলছে। বুধবার প্রচারের সময় শেষ হয়ে গেলেই এলাকায় এলাকায় টাকা বিলি করতে পারে বিজেপি। ৫০০ দিতে এলে বলবেন ১,০০০ চাই, ১,০০০ দিতে এলে বলবেন ২,০০০ চাই। ওটা আপনার টাকা, নিয়ে নেবেন। বলবেন, বিজেপিকে ভোট দেব। কিন্তু গিয়ে ভোটটা দিয়ে আসবেন জোড়াফুলে।’

এদিন জনসভা মঞ্চে বক্তৃতার সময় কোচবিহারের বিজেপি নেত্রীর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের হুমকি দেওয়ার ভাষণ নিজের মোবাইল ফোনে চালিয়ে শোনান উপস্থিত জনতাকে। এরপর তিনি বলেন, বিজেপি প্রার্থী ভোট চাইতে এলে এই ভিডিওটা তাকে দেখাবেন। ওদের নেত্রী তিন মাসের মধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের হুমকি দিয়েছে। বিজেপির তরফে তার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ? না হয়নি।

এরপরে তথ্য তুলে ধরে অভিষেক বলেন, ১১১২ কোটি টাকা খরচ করে ৬০ লক্ষ মায়েদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই টাকা বন্ধ হলে গোটাটাই দিল্লি চলে যাবে। আর আপনাদের হাতে থাকবে শূন্য। ওরা বাংলার টাকা বন্ধ করে কুড়ি হাজার কোটি টাকা দিয়ে সেন্ট্রাল ভিস্তা তৈরি করে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেন। এদিন ফের তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা দেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪-এর আবাসের বাড়ির বাড়ির টাকার প্রথম কিস্তি সাংসদ জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার হাত ধরে আপনাদের কাছে পৌঁছে দেব। কারণ এখানে বিজেপি জিতবে না।

গত শুক্রবার জম্মু ও কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, যাঁরা চৈত্র নবরাত্রির সময় আমিষ খান, তাঁদের মানসিকতা মুঘলদের মতো। সেই বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে কোচবিহারে ব্যাপক ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, যারা মাছ খায় তারা হিন্দুবিরোধী দেশবিরোধী একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরা বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতি কিছুই জানে না। আমি তো মাছ খাই আর প্রধানমন্ত্রী একথা বলার পর দুবেলা খাই। আপনারা তো মাছ খান। কিন্তু এরা আপনাদের দেশদ্রোহী বলছে যারা মাঝখান তাদের হিন্দুবিরোধী বলছে। এই বিজেপি কি আপনারা চান ? প্রশ্ন করেন অভিষেক। জনগণের মধ্যে দিয়ে উত্তর আসে না এই বিজেপিকে চাই না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here