খাঁ খাঁ করছে সবুজের দোকান! উপচে পড়া ভীড় এই বিক্রয় কেন্দ্রে। কেন জানেন ?

0
22

সায়ন সেন, জলপাইগুড়ি: দিনের পর দিন বাড়ছে তাপের দাপট! গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা জনগণের। এই গরম থেকে বাঁচতে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে চোখে পড়ছে একেকজনের একেক রকম কীর্তিকাহিনী। কেউ ছাদ জুড়ে সাদা করছে তো, কেউ রাত হলেই ছাদ জুড়ে ঠান্ডা জলে ভরিয়ে রাখছে। এই মজাদার কীর্তিগুলি বাদ দিয়ে বাইরে গেলেই চোখে পড়ে বাস্তবের করুণ দৃশ্য। বিক্রি নেই চারা গাছের বরং উপচে পড়া ভিড় শীতল যন্ত্র বিক্রয়ের দোকানে। ঠিক এমনই চিত্র উঠে এল জলপাইগুড়ি শহরে।

জানা গেছে,উত্তরের শান্ত শহর জলপাইগুড়িতে এখন বেলা বাড়তেই তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৩৫-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মধ্য দুপুরে তাপমাত্রা যখন চরমে তখন জলপাইগুড়ির রাজপথ রীতিমতো জনশূন্য হয়ে পড়ে। উত্তরের বন, জঙ্গল, ঝরনা, নদী, পাহাড় পরিবেষ্টিত শান্ত ও শীতল এই জলপাইগুড়ি শহরের তাপমাত্রাও যে এতটা বেড়ে যাবে তা কেউ ভাবেনি। গত চার দশকের মধ্যে এই প্রথম তাপমাত্রা এতটা ঊর্ধ্বমুখী এই শহরে।

আবহাওয়ার এমন আকাশ-পাতাল তফাতেও যেন হুঁশ ফিরছে না আমাদের। পথের ধারে গাছ বিক্রেতা পরিতোষ পালের কথায় অন্তত এটা স্পষ্ট। এদিন চোখে পড়ে শহরের সবকটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকানেই সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়ছে। গরমের থেকে খানিক স্বস্তি পেতে মানুষ এখন ঝুঁকছে ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম তথা এসি, ফ্রিজ, কুলারের দিকে। প্রাকৃতিকভাবে পরিবেশকে ঠান্ডা রাখার দায় এখন বোধহয় কারওরই নেই।

এদিন শহরের আর পাঁচটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বিক্রেতাদের একজন এই প্রসঙ্গে বলেন,শহরে এসি-র দাম বাড়লেও এবারে বিক্রি বেশ ভালোই হচ্ছে। অর্থাৎ, মূল্য যতই বাড়ুক না কেন আপস করে হলেও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের মাধ্যমেই শীতল রাখার পথ অবলম্বন করছে সাধারণ মানুষ। ইলেকট্রনিক দোকানের পাশেই খাঁ খাঁ করছে চারা গাছের সবগুলি দোকান। বিক্রি নেই একটাও গাছের। সরকারি নার্সারিতে লক্ষাধিক টাকার চারা গাছ পড়ে রয়েছে। এদিকে হয়তো ক’টি গাছ বুনলে এবং তা যত্ন করলে প্রকৃতি এমনিই খুশি হয়ে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে দিত চারপাশে।

প্রকৃতির খেয়াল রাখার সময় এখন কারওর নেই। চারিদিকে ক্রমেই সবুজ ধ্বংস করে উঠছে ইট কাঠ পাথরের উঁচু উঁচু ইমারত। সেই কংক্রিটের বাড়িতে দেখা নেই সবুজের। বরং ঘর সাজানোর জন্য কৃত্রিম সবুজ খোঁজেন অনেকেই। এখনও যদি আমাদের হুঁশ না ফেরে তাহলে বিশ্ব উষ্ণায়ন একদিন এমন জায়গায় পৌঁছবে যেখানে এসি, কুলারও প্রকৃতিকে শান্ত করতে পারবে না। সময় থাকতেই সাবধান সচেতন হতে হবে আমাদেরই। কারণ, প্রকৃতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব এবং কর্তব্য আমাদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here