খবরিয়া ২৪ নিউজ ডেস্ক, ২৯ মার্চ, নয়াদিল্লিঃ জেলবন্দি অবস্হাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মুখতার আনসারির। এক সময়ের কুখ্যাত গ্যাংস্টার পরে রাজনীতিবিদ হয়েছিলেন। শুধু রাজনীতিতে আসা নয়, তিনি পাঁচবার বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিতও হন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
বর্তমানে উত্তর প্রদেশের বান্দার এক কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর বমি হয়েছিল। এরপর, রাত ৮.২৫ মিনিট নাগাদ জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রানী দুর্গাবতী মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়েছিল। নয়জন ডাক্তারের একটি দল তাঁর চিকিৎসা শুরু করেছিলেন।
কিন্তু, তাঁদের সবরকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, একটু পরেই মুখতার আনসারির হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তোলাবাজি, অপহরণ, খুনের মতো বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ছিলেন মুখতার। তাঁর নিজস্ব একটি গ্যাং ছিল যারা উত্তরপ্রদেশের মউ, গাজিপুর, বারাণসী এবং জৌনপুর এলাকা জুড়ে সন্ত্রাস চালাত। পরে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির হয়ে নির্বাচনে লড়েন মুখতার। বিধায়কও নির্বাচিত হন।
তবে ২০০৪ সালে সন্ত্রাস প্রতিরোধ আইনে অভিযুক্ত হয়ে তিনি জেলবন্দি হয়েছিলেন। তারপর থেকে আর জেলের বাইরের মুখ দেখেননি তিনি। এদিকে মুখতার আনসারির মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে উমর দাবি করেছেন, ‘বাবাকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছিল।’ উমরের দাবি, বাবার খাবারে বিষ দেওয়া হয়েছিল। সেই খাবার খেয়েই মৃত্যু হয়েছে বাবার।
গত ১৯ মার্চ নাকি মুখতারকে রাতের খাবারের সঙ্গে বিষ দেওয়া হয়েছিল, এমনই অভিযোগ করেছেন উমর। এছাড়াও মুখতার মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন উমর। বিষয়টি নিয়ে আদালতের যাওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। বাবার মৃত্যুর খবর প্রশাসনের তরফে তাঁদের জানানো হয়নি বলেও দাবি করেন উমর। শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর মুখতারের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তার পরই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে বলে জানান উমর।
উত্তর প্রদেশের মউ কেন্দ্র থেকে পাঁচবার বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়া মুখতারের মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি। মুখতার আনসারির বিরুদ্ধে ৬১টি ফৌজদারি মামলা ছিল। খুনের অভিযোগ ছিল ১৫টি। শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, পঞ্জাবের জেলেও দু’বছর কাটিয়েছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গত বছর কুখ্যাত গ্যাংস্টারদের নিয়ে ৬৬ জনের যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতে মুখতার আনসারির নাম ছিল।